পৃথিবীতে আছে কি এমন বস্তু বা শক্তি যার পরিবর্তন নাই, এ দিক থেকে আপাতত দৃষ্টিতে গীতার দর্শন হিসেবে মনে হচ্ছে, কৃষ্ণ বোধ হয় ভুল বলেছে, আসলে তা নয়, যেমন গীতায় কৃষ্ণ আত্মাকে অক্ষয় , ছেদনহীন, দগ্ধহীন একটা শক্তি, অর্থাৎ শক্তির ধ্বংস নাই, কিন্ত তাই বলে বলেছেন কি শক্তির পরিবর্তন নাই, অবশ্যই না, যেমন যে নির্দিষ্ট সময়ে সাধনা কিংবা যোগ সাধনা করে দেহকে গঠন করবেন , তার দেহের জীবনীশক্তি, আর একজন সাধারণ ভাবে বেঁচে থাকা মানুষের আত্মিক বা জীবনী শক্তি কি এক হবে! কৃষ্ণ ভালো করেই জানেন জীবনের বাইরে আলাদা আত্মা নাই, তাই তিনি ছেদন , দগ্ধ, ক্ষয় এ সবের উর্দ্ধে আত্মাকে জেনেছেন, প্রাণ শক্তি যেহেতু বস্তু শক্তিরই একটা অংশ, অর্থাৎ বিশ্ব জগতে বস্তু থেকে যেহেতু প্রাণের উৎপত্তি আর প্রাণ যেহেতু বস্তুকে নিয়ে তার প্রাণের গতির দিকে ছুটে চলে, এই ছুটে চলা বা বৃদ্ধিই প্রাণের ধর্ম, এই প্রাণশক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত সজীব থাকে কতক্ষণ এক দেহ থেকে আব এক দেহে রূপান্তর হয়, কিন্ত তাই বলে মরা দেহের আত্মা কোন মরা দেহে ঢুকে ঐ দেহকে জীবন্ত করে না, কারণ আত্মা যে দেহে ঢুকবে সে দেহ তো এমনিতেই জীবন্ত, সুতরাং জীবন্ত দেহে আত্মা ঢুকার কোন প্রয়োজন আছে কি? পৃথিবীতে কি কেউ দেখেছন কোন মৃত ব্যক্তির আত্মা অর্থাৎ মৃত আত্মা কোন মৃত দেহে ঢুকে দেহকে জীবিত করেছে সুতরাং এ সব ভুল, নয়ত স্বামী স্ত্রীর মিলনের সময় অন্য মৃত ব্যক্তির আত্মা ঢুকা ছাড়া আর কোন উপায় নাই, মানুষ মরার পর কল্পিত আত্মাটাকে জীবিত রেখে ব্রাম্মনদের আদ্যশ্রাদ্ধ, গয়ায় পিন্ডদান এ সব নিয়ম কানুন তৈরী করা হয়েছে ব্রাম্মনদের স্বার্থে, আর অন্যদিকে গীতায় যেহেতু জন্মান্তরবাদকে স্বীকার করা হয়েছে তাই এখনে এগার দিনে শ্রাদ্ধ, বার দিনে শ্রাদ্ধ এ সব ভিত্তিহীন এবং গীতা বিরুধী, সচল প্রাণ শক্তির রূপান্তরতে বিকৃত করে মরার পর আত্মাকে জীবিত রেখে পুরোহিত দর্পণ দিয়ে এ সব কিছুই ব্রাম্মনদের আদ্য শ্রাদ্ধের ব্যবসা করার জন্য!!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন