শনিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৬

বেদ বানী

১. সদা সর্বত্র বিরাজমান,
তন্দ্রাহীন সদা সজাগ, প্রতিনিয়ত
করুণাবর্ষণকারী সর্বশক্তিমান হে
প্রভু, আমরা শুধু তোমরাই মহিমা
স্মরণ করি, তোমরাই জয়গান গাই।
প্রভু হে আমাদের সর্বোত্তম
আত্মিক পথে, আলোকিত পথে
পরিচালনা কর, আমরা যেন সবসময় সত্য-
মিথ্যার পার্থক্যকে অনুধাবন
করতে পারি। ঋগ্বেদ, ৩/৬২/১০
.
২. সত্য জ্ঞানী তিনিই, যিনি
জানেন প্রভু এক এবং অদ্বিতীয়।
তিনি সর্বশক্তিমান এবং
সর্ববিষয়ে একক ক্ষমতার অধিকারী
প্রাণ এবং নিষ্প্রাণের সবকিছুই
তাঁর নখদর্পণে। সকল ক্ষমতার
কেন্দ্র তিনি একক ও অনন্য।
অথর্ববেদ, ১৩/৫/১৪-২১
.
৩. স্বর্গীয় জ্যোতি ও আনন্দ
উপলব্ধির প্রতীক ‘ওঁ’ স্থাপিত
হোক তোমার হৃদয়ে অনন্তকালের
জন্য। যজুর্বেদ, ২/১৩
.
৪. মহাপ্রভুর দৃষ্টিতে কেউই বড় নয়,
কেউই ছোট নয় সবাই সমান, প্রভুর
আশীর্বাদ সবারই জন্য। ঋগ্বেদ,
৫/৬০/৫
.
৫. হে নেতা, হে পুরোধা ঈশ্বরের
গুণাবলীতে গুণান্বীত হও।
যজুর্বেদ, ১/১৮
.
৬. অলস মস্তিষ্ক কুচিন্তার সহজ
শিকার। ঋগ্বেদ, ১০/২২/৮
.
৭. মন চলে যায় আকাশে-পাতালে;
পাহাড়ে-সাগরে, মনকে নিয়ে আস
নিজেরই অন্তরে যেন তা থাকে
তোমারই নিয়ন্ত্রণে। ঋগ্বেদ,
১০/৫৮/২
.
৮. হে নেতা হে পুরোধা পাহাড়ের
মত দৃঢ় ও অজেয় হও। কর্তব্য পালনে
সবসময় অবিচল থাক। যজুর্বেদ, ১২/১৭
.
৯. যারা সৎ পথে কঠোর পরিশ্রম করে
এবং পরস্পরকে সহযোগিতা করে
তাদেরকে প্রভু সাহায্য করেন।
ঋগ্বেদ, ৪/২৩/৭
.
১০. সৎকর্ম মানুষকে দৃঢ় ও সাহসী
করে। দেহ মনকে রোগ ও পাপ থেকে
মুক্ত রাখে। সকল প্রতিকূলতার উপর
বিজয়ী করে। ঋগ্বেদ, ৫/১৫/৩
.
১১. হে মানুষ স্বনির্ভর হও বাইরের
সাহায্যে দাসে পরিণত হইও না।
যজুর্বেদ, ৬/১২
.
১২. হে প্রভু আমাদের সর্বোত্তম
সম্পদ দান কর, দান কর কালজয়ী মন,
আত্মিক সুষমা, অনন্ত যৌবন,
আলোকজ্জ্বল রূপ আর মধুর বচন।
ঋগ্বেদ, ২/২১/৬
.
১৩. হে মানুষ উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে
আন্তরিকতার সাথে পরিশ্রম কর,
দারিদ্র্য-অসুস্থতা তোমার কাছ
থেকে পালিয়ে যাবে। অথর্ববেদ,
৬/৮১/১
.
১৪. কখনও জুয়া খেলবে না,
পরিশ্রমলব্ধ সম্পদ ভোগ কর ও
পরিতৃপ্ত থাক, পরিশ্রমলব্ধ সম্পদই
সত্যিকারের সুখ দিতে পারে।
ঋগ্বেদ, ১০/৩৪/১৩
.
১৫. জীবনের প্রতিটি স্তরে
সবধরনের ঋণ থেকে মুক্ত থাকো।
অথর্ববেদ, ৬/১১৭/৩
.
১৬. স্বনির্মিত সহস্রশৃঙ্খলে
মানুষই নিজেকে বন্দী করে
রেখেছে। ঋগ্বেদ, ৫/২/৭
.
১৭. হে মানুষ উঠো, দাঁড়াও। পতিত
হওয়া তোমার স্বভাবজাত নয়।
জ্ঞানের আলোকবর্তিকা
শুধুমাত্র তোমাকেই দেওয়া
হয়েছে। যা দিয়ে তুমি সকল অন্ধকূপ
এড়িয়ে যেতে পার। অথর্ববেদ, ৮/১/৬
.
১৮. কর্কশ স্বরে কথা বল না, তিক্ত
কথা যেন মুখ ফসকে বেরিয়ে না যায়।
যজুর্বেদ, ৫/৮
.
১৯. হে প্রভু সামর্থ্য দাও
উদ্দীপনাময় সুন্দর ও সাবলীল কথা
বলার। ঋগ্বেদ, ১০/৯৮/৩
.
২০. সত্যিকারের ধার্মিক সবসময়
মিষ্টভাষী ও অন্যের প্রতি
সমমর্মী। সামবেদ, ২/৫১
.
২১. সমাজকে ভালবাস, ক্ষুধার্তকে
অন্ন দাও, দুর্গতকে সাহায্য কর,
সত্য-ন্যায়ের সংগ্রামে সাহসী
ভূমিকা রাখার শক্তি অর্জন কর।
ঋগ্বেদ,৬/৭৫/৯
.
২২. নি:স্বার্থ দানের জন্য রয়েছে
চমৎকার পুরস্কার। তারা লাভ করে
আশীর্বাদধন্য দীর্ঘজীবন ও অমরত্ব ।
ঋগ্বেদ, ১/১২৫/৬
.
২৩. জীবনের প্রতিটি স্তরে
অনিয়ন্ত্রিত রাগ-ক্রোধ থেকে
দূরে থেকো। সামবেদ, ৩০/৭
.
২৪. একজন নিরীহ মানুষের ক্ষতি যে
করে সে মানুষ নয়, সে হায়না। তার
কাছ থেকে দূরে থেকো। ঋগ্বেদ,
২/২৩/৭
.
২৫. ঈর্ষা থেকে হৃদয়কে মুক্ত কর,
সহিংসতা থেকে বিরত থাকো।
সামবেদ, ২৭/৪
.
২৬. যে ক্ষুধার্ত সঙ্গীকে
অভুক্ত রেখে একাই ভুরীভোজ করে
এবং যে স্বার্থপর তার সাথে কখনও
বন্ধুত্ব কর না। ঋগ্বেদ, ১০/১১৭/৪
.
২৭. বিশ্বজনীন মমতার স্বাদ যে
পেয়েছে সে সকল প্রাণীর মাঝেই
নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পায়। যে
নিজেকে পরমাত্মার অংশ মনে করে
সে কখনও অন্যের দিকে অবজ্ঞাভরে
তাকায় না। সে কখনও কাউকে ঘৃণা
করে না, তাই ঘৃণা, দুঃখ, বেদনাও
তাকে স্পর্শ করতে পারে না।
যজুর্বেদ, ৪০/৬
.
২৮. হে মানব জাতি, তোমরা
সম্মিলিতভাবে মানুষের কল্যাণে
নিয়োজিত হও, পারস্পারিক মমতা ও
শুভেচ্ছা নিয়ে একত্রে পরিশ্রম
কর, জীবনের আনন্দে সম অংশীদার হও।
অথর্ববেদ, ৩/৩০/৭
.
২৯. ভ্রাতৃসঙ্গে সকল মানুষ সমান,
কেউ ছোট নয় কেউ বড় নয়। যজুর্বেদ,
১৬/১৫
.
৩০. হে মানুষ সুষম জীবনাচর অনুসরণ
কর, ধরিত্রী থেকে আহরিত খাবার ও
পানীয় সমভাবে বণ্টন কর। একটি
চাকার শিকগুলো সমভাবে
কেন্দ্রে মিলিত হলে যেমন
গতিরসঞ্চার হয়, তেমনি সাম্য-
মৈত্রীর ভিত্তিতে ঐকবদ্ধ হও,
তাহলেই অগ্রগতি অবধারিত।
অথর্ববেদ, ৩/৩০/৬
.
৩১. হে পূজ্য বিদ্বান ও সজ্জন
বৃন্দ, আমরা কর্ণদ্বারা
কল্যাণময়ী বাণী শ্রবণ করব।
চক্ষুদ্বারা কল্যাণময় দৃশ্য দর্শন
করব। অচঞ্চল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
দ্বারা পরমাত্মার পূজা করব।
বিদ্বানেরা যেরূপ আয়ুকে লাভ
করেন আমরাও তার অনুরূপ আয়ু
প্রাপ্ত হব। যজুর্বেদ, ২৫/২১
.
৩২. হে পরমাত্মন। তুমি তেজস্বী,
আমাতে তেজ স্থাপন কর। তুমি
বীর্য্যবান, আমাতে বীর্য্য
স্থাপন কর। তুমি বলবান, আমাতে বল
স্থাপন কর। তুমি ওজস্বী, আমাতে
ওজঃ স্থাপন কর। তুমি অধর্মের
দন্ডদাতা, আমাতে অধর্ম দমনের
শক্তি স্থাপন কর। তুমি সহনশীল,
আমাতে সহনশক্তি স্থাপন কর।
যজুর্বেদ, ১৯/৯
.
৩৩. যিনি সকলের সুখদাতা,
সর্বোৎকৃষ্ট ন্যায়াধীশ,
ঐশ্বর্য্যদাতা, মহাশক্তিশালী ও
মহাপরাক্রান্ত, তিনি আমাদের
জন্য সুখ ও শান্তি দান করুন।
ঋগ্বেদ, ১/৯০/৯
.
৩৪. হে মানব! তোমরা একসঙ্গে চল,
একসঙ্গে মিলে আলোচনা কর,
তোমাদের মন উত্তম সংস্কারযুক্ত
হোক। পূর্বকালীন জ্ঞানী
পুরুষেরা যেরূপ কর্তব্য সম্পাদন
করেছেন তোমরাও সেই রূপ কর।
ঋগ্বেদ ১০/১৯১/২
.
৩৫. তোমাদের সকলের মত এক হোক,
মিলন ভূমি এক হোক, মন এক হোক,
সকলের চিত্ত সম্মিলিত হোক,
তোমাদের সকলকে একই মন্ত্রে
সংযুক্ত করেছি, তোমাদের সকলের
অন্ন ও উপভোগ একই প্রকারের
দিয়েছি। ঋগ্বেদ ১০/১৯১/৩
.
৩৬. তোমাদের সকলের লক্ষ্য সমান
হোক, তোমাদের হৃদয় সমান হোক,
তোমাদের মন সমান হোক। এই ভাবে
তোমাদের সকলের শক্তি
বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হোক। ঋগ্বেদ,
১০/১৯১/৪
.
৩৭. আমি তোমাদের জন্য সহৃদয়তা,
উত্তম মন, নির্বৈরতা প্রদান
করেছি। গাভী যেমন নবজাত বৎসের
মলিন শরীরকে সর্বশ্রেষ্ঠ অঙ্গ
জিহ্বা দ্বারা পরিষ্কার করে
তোমরা একে অন্যের প্রতি সেইরূপ
প্রেম কর। অথর্ববেদ ৩/৩০/১
.
৩৮. তোমরা জ্যেষ্ঠের সম্মান
করিও। তোমরা বিচারশীল সাধক একই
বন্ধনের নীচে আবদ্ধ হয়ে চলছ।
তোমরা পৃথক হইও না। একে অন্যের
সঙ্গে মনোহর কথাবার্তায় অগ্রসর
হও। তোমাদেরকে এক পথের পথিক এবং
উত্তম মন বিশিষ্ট করেছি। অথর্ববেদ,
৩/৩০/৫
.
৩৯. তোমাদের পান একসঙ্গে, ভোজনও
একসঙ্গে হোক। তোমাদেরকে এক
সঙ্গে একই প্রেমবন্ধনে যুক্ত
করেছি। সকলে মিলে পরমাত্মাকে
পূজা কর। রথের চাকার চারিদিকে
যেমন অর থাকে তোমরা সেই ভাবে
থাক। অথর্ববেদ, ৩/৩০/৬
.
৪০. হে মানব, ঈশ্বরের মহিমাকে
বৃদ্ধি কর, ভ্রান্ত আচরণশীল
অনার্যকে সমুচিত শিক্ষা দাও।
বিশ্বের সকলকে আর্য কর। ঋগ্বেদ,
৯/৬৩/৫
.
৪১. যিনি এক ও অদ্বিতীয়, যিনি
মনুষ্যদের সর্বদ্রষ্টা, যিনি
সর্বশক্তিমান ও পালক একমাত্র
তাঁকেই উপাসনা কর। ঋগ্বেদ, ৬/৪৫/১৬
.
৪২. (পরমেশ্বর সকল মানুষের প্রতি
উপদেশ দিচ্ছেন) ব্রাহ্মণ,
ক্ষত্রিয়, শূদ্র, বৈশ্য, স্বীয়
স্ত্রী ও সেবকাদি এবং অন্যান্য
সকল মানুষকেই যেমন আমি এই
মঙ্গলদায়িনী বেদবাণীর উপদেশ দান
করিয়াছি, তোমরাও সেইরূপ কর। যেমন
বেদবাণীর উপদেশ করে আমি
বিদ্বানদের প্রিয় হয়েছি, তোমরাও
সেরূপ হও। দানের জন্য আমি এই
সংসারে দানশীল পুরুষদের যেমন
প্রিয় হয়েছি, তোমরাও সেরূপ হও।
যজুর্বেদ, ২৬/২
.
৪৩. ওঠো! জাগো! সত্যের পতাকা
সমুন্নত রাখো। দৃপ্ত পদক্ষেপে
এগিয়ে যাও অন্যায় ও অসত্যের
বিনাশে। ঋগ্বেদ, ১০/১০৩/১৩
.
৪৪. তোমরাও সেরূপ হও। আমার ইচ্ছা
বেদবিদ্যার প্রচার বৃদ্ধি হোক।
আমার মধ্যে যেমন
সর্ব্ববিদ্যাহেতু সুখ রয়েছে,
তোমরাও সেরূপ বিদ্যা গ্রহণ ও
প্রচার দ্বারা মোক্ষ সুখ লাভ কর।
যজুবের্দ ২৬/২
.
৪৫. হে পোষক বীর, কর্ম ও বুদ্ধিকে
লাভ কর। দেশোন্নতি করতে সমর্থ হও।
রাজকোষ পূর্ণ কর। অভাবগ্রস্তকে
ধনদান কর। অস্ত্রকে তীক্ষ্ম কর
এবং প্রজাদের উদর পূরণের
ব্যবস্থা কর। ঋগ্বেদ, ১/৪২/৯
সত্যযুগঃ
নারায়ণপরা বেদা নারায়ণপরাক্ষরা।
নারায়ণপরা মুক্তি নারায়ণপরা
গতিঃ।।
ত্রেতাযুগঃ
রাম নারায়ণায়ন্ত মুকন্দ মধুসূদন।
কৃষ্ণ কেশব কংসারে হরে বৈকন্ঠে
বামন।।
দ্বাপরযুগঃ
হরে মুরারে মধুকৈটভারে গোপাল
গোবিন্দ মুকুন্দ শৌরে।
যাজ্ঞেস নারায়ণ কৃষ্ণ বিষ্ণো
নিরাশ্রয়ং মাং জগদীশ রক্ষ।।
কলিযুগঃ
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে
হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।
ইদমহমনৃতাত্ সত্যমুপৈমি ।।১।। যজু ১/৫ ।।
সত্যমেব জয়তি নানৃতং সত্যেন পন্থা
বিততো দবয়ানঃ ।য়েনা ক্রমন্ত্যৃষয়ো
হ্যাপ্তকামা য়ত্র তত্সত্যস্য পরমং
নিধানম্ ।।২।। মুন্ডক ৩ ।১।৬ ।।
অর্থ :-মনুষ্য মধ্যে মনুষ্যত্ব এই যে ,সব
সময়
মিথ্যা ব্যবহার ত্যাগ করে সত্য
ব্যবহারকে সর্বদা গ্রহণ করবে ।।১।।
কেননা সর্বদা সত্যের বিজয় ও মিথ্যার
পরাজয় হয়ে থাকে ।এইজন্য যে সত্যের
জন্য ধার্মিক ঋষিরা সত্যের নিধি
পরমাত্নাকে প্রাপ্ত হয়ে আনন্দিত
হয়েছিলেন এবং এখনও হচ্ছেন ,তার
সেবন মনুষ্য কেন করবেন ।।২।।
>ন সত্যাত্ পরোধর্মো নানৃতাত্ পাতকং
পরম্ ।।
এটা নিশ্চিত যে সত্যের উপরে কোন
ধর্ম নেই এবং অসত্যের উপরে কোন অধর্ম
নেই ।।
" মনুর্ভব জনয়া দৈব্যং জনম্"
~ঋগবেদ ১০.৫৩.৬
অনুবাদ- প্রকৃত মানুষ হও
এবং অন্যকেও মানুষ
হিসেবে গড়ে তোল।
ওঁ শান্তি শান্তি শান্তি
হে বীরহৃদয় যুবকগণ ,তোমরা বিশ্বাস কর যে
,তোমরা বড় বড় কাজ করবার জন্য জন্মেছ। ওঠ,
জাগো, আর ঘুমিও না; সকল অভাব, সকল দুঃখ
ঘুচাবার শক্তি তোমাদের ভিতরেই আছে। এ
কথা
বিশ্বাস করো, তা হলেই ঐ শক্তি জেগে উঠবে।
~স্বামী বিবেকানন্দ
"এই সমাজের যত হানি অধর্মী
ব্যক্তিদের দ্বারা না হয়ে থাকে,
তার চেয়ে অধিক হানি
ধর্মজ্ঞানী ব্যক্তিদের
নিষ্ক্রীয়তার দ্বারা ঘটে
থাকে।"
-মহারথী কর্ণ
মানুষকে সর্বদা তাহার দুর্বলতার
বিষয় ভাবিতে বলা তাহার
দুর্বলতার প্রতীকার নয়- তাহার
শক্তির কথা স্মরণ করাইয়া
দেওয়াই প্রতিকারের উপায়।
তাহার মধ্যে যে শক্তি পূর্ব
হইতে বিরাজিত ,তাহার বিষয় স্মরণ
করাইয়া দাও।
~ স্বামী বিবেকানন্দ।
"নিজেকে জানাই যথার্থ
জ্ঞান, নারায়ন জ্ঞানে
জীবের সেবাই যথার্থ কর্ম ও
পরমপুরুষ কে আনন্দ দেওয়ার ব্রতই
যথার্থ ভক্তি।"
★শ্রী শ্রী আনন্দমুর্তি★
জীবনে ঝুকি নাও
জিতলে তুমি নেতৃত্ব দিবে ।
আর না জিতলে তুমি নতুন কাউকে
পথ দেখাবে। ।।।।
_____ স্বামী বিবেকানন্দ
শ্রী রামচন্দ্রের কিছু বাণী অমৃত-
১.জ্ঞানীর নিকট সত্যই পরম ধর্ম।
২.দুর্বলই কেবল ভাগ্যের দোষারোপ করে
আর বীর
ভাগ্যকে অর্জন করে।
৩.গোদান করে দড়ির উপর মায়া রেখে
কি
লাভ?
যখন
মোহ ত্যাগ করবে,তখন নিঃস্বার্থভাবে
ত্যাগ
করবে।
৪.শোকের চেয়ে বড় নাশকর্তা আর কিছু
নেই,শোক
মানুষের সব শক্তিকেই নষ্ট করে দেয়,তাই
শোক
করোনা।
৫.ব্যাবহার ও চরিত্রেই বংশের পরিচয়
হয়।
৬.মিথ্যাবাদী ব্যাক্তি সর্পের চেয়েও
ভয়ঙ্কর।
৭.সত্যই এ জগতের নিয়ন্ত্রক,সত্যেই ধর্ম
প্রোথিত হয়ে আছে।
৮.মাতৃঋণ কোন সন্তানই কখনো শোধ
করতে
পারেনা।
৯.চন্দ্র তাঁর সৌন্দর্য হারাতে
পারে,হিমবন
বরফশুন্য হয়ে পড়তে পারে,সমুদ্র বিরান
হয়ে যেতে
পারে কিন্তু রাম কখনো তার
প্রতিজ্ঞা
হতে
বিচ্যুত হয়না।
১০.শেকড়হীন বিশাল বৃক্ষ ও যেমন সত্তরই
নির্জীব
হয়ে পড়ে ঠিক তেমনি নিরীহের
ক্ষতিকারী শত
শক্তিশালী হলেও সমূলে পতিত হয়।
১১.উৎসাহ এর চেয়ে বড় বল আর কিছুই
নেই,উৎসাহী
ব্যাক্তি জগত ও জয় করতে পারে।
১২.দুঃখ বা দুর্দশায় একজন প্রকৃত বন্ধুর মত
পরম
সঙ্গী আর কেউ নেই
অনুকম্পা,দয়া,ক্ষমা ও মানবতার মত বড় গুন
আর নেই।
১৩.হৃদয়বানের কোন ক্রোধ নেই।
১৪.অতি গর্জনকারী মেঘ খুব কদাচিৎই
বর্ষে,প্রকৃত
বীর অকারনে বাক্য করে না ।

মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৬

কোরবানী

কোরান মতে কোরবান কিংবা কোরবানীর তাৎপর্য
কোরবানির নামেপশুজবাই কি কুরআন নির্দেশিত?বিষয় থেকে বিষ,ভোগ থেকে ভোগান্তি আর ত্যাগ থেকে শান্তি।ত্যাগ ব্যতীত শান্তি লাভের আর কোন পথ নেই।পৃথিবীর সকল ধর্মের সকল সাধক যুগে যুগে ত্যাগ বা কোরবানির বাণী প্রচার করেছেন।কোন কালে কোন সাধকই কোরবানি ব্যতীত আল্লাহর নৈকট্য লাভের দ্বিতীয় কোন পন্থা প্রদর্শন করেননি।পৃথিবীতে এমনকোন ধর্মও নেই যে ধর্ম পকারবানির আদেশদেয়নি।বেদ,গীতা,বাইবেল কোরবানির নির্দেশনায় পূর্ণ।শান্তির ধর্ম ইসলামেরও মূল বিষয় - কোরবানি।আরবি‘কোরবান’শব্দের উর্দু সংস্করণ‘কোরবানি’।‘কোরবান’শব্দের আভিধানিক অর্থ ত্যাগ,উৎসর্গ।কোরবান শব্দটি মূল শব্দ‘ক্কুরব’থেকে উদ্ভুত।‘ক্কুরব’অর্থ সন্তুষ্টি,নৈকট্য ও সান্নিধ্য।এভাবে,কোরবান শব্দের অর্থ দাঁড়া

বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৬

বুদ্ধ ধর্ম

nnot be far,’- স্কটের মৃত্যু দিনে
চন্দ্রালোকে চন্দ্রাহত
‘প্যাঁচা’র পাঁচালী
বনপলাশীর পদাবলী-১, বারৈইয়ারঢালা
২৯ ফেব্রুয়ারির সকাল
জসীম উদদীনের ভ্রমণকাহিনী ‘চলে মুসাফির’
শতবর্ষ আগে বরিশালের (বাকেরগঞ্জ) বন্যপ্রাণী
শুভ জন্মদিন আলী সাহেব
শতবর্ষ আগের ময়মনসিংহের পশু-পাখি
শত বছরে খুলনার বন্যপ্রাণী
সদস্য পরিচয়: *

পাসওয়ার্ড: *

ভুলোনা আমায়

ছবিতে দেখানো কোডটি কি?: *

OpenID ব্যবহার করে লগইন করুন
সদস্য নিবন্ধন
পাসওয়ার্ড হারিয়েছে?
নীড়পাতা » ব্লগ » তারেক অণু এর ব্লগ
যাকে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব বলে উপলব্ধি করতেন রবীন্দ্রনাথ
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: বিষ্যুদ, ১২/০৪/২০১২ - ৫:২০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি: গ্রন্থালোচনা স্মরণ বুদ্ধ দেব রবীন্দ্রনাথ

জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক – কি আশ্চর্য শক্তিশালী ধরনের নব চেতনার ধারক একটি কথা! জগতের সকল প্রাণী, কেবলমাত্র মানুষ নয়, সমস্ত প্রাণীকুলের সুখী হবার অধিকার নিয়ে কথা বলা হয়েছে এইখানে। সেই আঁধার যুগে শোনালেন সাম্যবাদের গান, কে তিনি?
সিদ্ধার্থ নামের এক যুবরাজ, যিনি পরিচিত সারা বিশ্বের কাছে গৌতম বুদ্ধ হিসেবে। তিনিই বিশ্বে প্রথম কমিউন বা সঙ্ঘ শব্দটি ব্যবহার করেন, যে কারণে অনেকেই তাকে কমিউনিজমের আদি গুরু বলে থাকেন, সেই সাথে সকলের সম অধিকারের ব্যাপারটি তো আছেই।
বুদ্ধদেব আমার কাছে এক পরম আশ্চর্যের মানুষ, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে আমাদেরই অঞ্চলের এই পাহাড়ি রাজ্যে জন্ম নিয়ে আপাতদৃষ্টিতে কোন অলৌকিক বলে সত্যজ্ঞানপ্রাপ্ত হয়ে অলৌকিকতাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বাণী দিলেন- ধর্মকে বিশ্বাস করো না - অন্ধভাবে ভুল জিনিস শিখতে পার, সংস্কৃতিকে অনুকরণ করো না - অন্যের ভুল ধারণা তোমাকে প্রভাবিত করতে পারে, নিজে যাচাই-বাছাই করে যুক্তিসিদ্ধ মনে হলেই তবে সেই তথ্য গ্রহণ করতে পার।
সেই সাথে চারপাশে ছড়িয়ে থাকা লক্ষ কোটি দেবতাদের তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে বললেন, আমাদের বিপদে তো দেবতারা এগিয়ে আসেন না, নিজেদেরই সামলাতে হয়! তাদের কি দরকার আমাদের ?
কিন্তু তাহলে যে দেবতা জ্ঞানে বুদ্ধ দেবের মূর্তিতে সারা বিশ্ব জুড়ে পুজো করা হয়! নানা বইপত্র ঘেঁটে জানলাম- যে বুদ্ধ ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করতেন না তিনি নিশ্চয়ই নিজের মূর্তি গড়ে উপাসনা করতে বলে যান নি। এই ক্ষেত্রে মূল সমস্যা পাকিয়ে গেছে ভারতীয় উপমহাদেশে আক্রমণকারী গ্রীক সেনাদল, যাদের নেতৃত্বে ছিল আলেকজান্ডার। তারা বয়ে আনা প্যাগান ধর্মের সাথে এই দেশীয় প্রচলিত বিশ্বাসের একটা জগাখিচুড়ি নির্মাণের প্রয়াস চালালো এবং ব্যাপক ভাবে সফল হল, মানুষের মনে গেড়ে থাকা বুদ্ধদেবকে তারা গ্রীক সূর্যদেবতা অ্যাপোলোর আদলে মাথায় উঁচু করে বাঁধা চুলের আদলে ঢিবি দিয়ে নির্মাণ করল। উল্লেখ্য, আফগানিস্তানেই মনে হয় একমাত্র উপাসনালয় স্থাপিত হয়েছিল যেখানে একই বেদিতে হারকিউলিস এবং বুদ্ধদেবের মূর্তি আসীন ছিল।
মনে প্রশ্নে ঝড় বয়ে যায়, যে মানুষটি এতটাই আধুনিক ছিল, সে কি করে গতজন্ম- পরজন্মের মত খেলো ব্যাপারে বিশ্বাস স্থাপন করতে পারেন? পরে শুনি, এটিও ঐতিহাসিক রাজনৈতিক চক্রান্ত, শঙ্করাচার্য নামের সেই মহা ধড়িবাজ মৌলবাদী হিন্দুব্রাহ্মণ বুদ্ধ দেবের দর্শনের জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করে তাকে বিষ্ণুর একটি অবতার হিসেবে চালিয়ে দিল, সেই সাথে আর্য হিন্দুধর্মের পরজন্ম- জন্মান্তরের মত বিষয়গুলো বৌদ্ধধর্মের অংশ হয়ে গেল, অথচ বুদ্ধদেব কোন ধর্ম প্রচার করতেন না, তিনি তার একান্ত উপলব্ধি অর্থাৎ দর্শন প্রচার করতেন, অথচ তার মৃত্যুর অনেক বছর পরে এই মহামানবকে নিয়েই চালু হল ধর্ম, মূর্তিগড়া, যাবতীয় ব্যবসা!
বুদ্ধদেব নিয়ে যত তথ্য হাতে আসে ততই শ্রদ্ধার মাত্রা মহাকাশ ছাড়িয়ে যায়, অবাক বিস্ময়ে আপ্লুত হতে থাকি বারংবার , বিশ্বের যেখানেই যাওয়া হয় বুদ্ধ সম্পর্কে নতুন বইয়ের খোঁজ পেলে সংগ্রহ করবার চেষ্টা করি সবসময়ই, তবে তাকে দেবতা জ্ঞানে গদ গদ ভক্তি মার্কা লেখা না, তার দর্শনমূল্য বিবেচনা করে তথ্যসমৃদ্ধ লেখা। এবং তাবৎ বিশ্ব হাতড়িয়ে কয়েক মাস আগে খেয়াল করি বুদ্ধদেব সম্পর্কে আমার পড়া সবচেয়ে সুলিখিত, ব্যপক তথ্যসমৃদ্ধ বইটি লেখা হয়েছে বাংলা ভাষাতেই, লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
বুদ্ধদেব নামের শীর্ণ বইটি মূলত রবিঠাকুরের বিভিন্ন সময়ে বুদ্ধদেব নিয়ে লেখার সংকলন, বইটির প্রথম লাইন হচ্ছে- আমি যাকে অন্তরের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব বলে উপলব্ধি করি আজ এই বৈশাখী পূর্ণিমায় তার জন্মোৎসবে আমার প্রণাম নিবেদন করতে এসেছি।
এরপরে বিশ্বকবি তার ঐন্দ্রজালিক ভাষায় উচ্ছসিত উপমা আর মুগ্ধতার জাল বুনেই থেমে যান নি বরং রীতিমত যুক্তির কষ্টিপাথর দিয়ে যাচাই করে দেখিয়েছেন কেন বুদ্ধকে বিশ্বমানব বলা হয় এবং কেন তার বাণী সর্বজনগ্রাহ্য হবে। বিশেষ করে কবি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন বারংবার সেই ভেদাভেদমুক্ত সাম্যবাদী সমাজ ব্যবস্থার প্রচলনের চেষ্টার, উল্লেখ করেছেন বুদ্ধের আবির্ভাবে- সত্যের