বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৭

আনন্দ বেদ*

হিন্দুরা বড়ই ভাগ্যবান, স্বর্গ এখন বিক্রি হচ্ছে, কে দিচ্ছে? তাও একটি বেশ্যা সংগঠন, যার নাম ইসকোন? এই সংগঠনটি গীতার কৃষ্ণের উপাসনার চেয়ে কৃষ্ণের নামে ধন সম্পদ টাকা নিয়েই ব্যস্ত বেশী আর যেটুকু ঢং ধরে কৃষ্ণ ভাবনার কথা বলে, তাও তো তাদের আসল কৃষ্ণ নয়, কারণ গীতার কৃষ্ণ চায় পুজা আর এরা চায় টাকা, সহজ সরল হিন্দুরা পেতে চায় স্বর্গ আর ইসকোন পেতে চায় ভক্তের ধন সম্পদ, কৃষ্ণ চায় ফুল, জল আর ইসকোন মাগীরা চায় কৃষ্ণের জন্য সোনার অলংকার, এই জন্য আমি বৈষ্ণব মাগী বলি, কারণ একজন বেশ্যার লক্ষ্য যেমন পুরুষের লিঙ্গ নয়, পুরুষ কেমন হয় হোক তার টাকা, তেমনি ইসকোনেরও লক্ষ্য ধনী ভক্তের টাকা, এই হচ্ছে তাদের বৈরাগ্য! বৈরাগ্যবাদীরা নাম বিলিয়ে বিমানে উড়ে বেড়ায় আর নিষ্পাপ কৃষ্ণ ভক্ত আলু ভর্তা ভাত পায় না, ভগবানের কি বিচার? গরীব শ্রেণী এবং ধর্মের ভক্তরা বুঝতেই পারে না, কি ভাবে তারা শোষিত হয়, এ প্রসংগটি না হয় থাক, মনে করুণ আপনি ইসকোনের ভালবাসায় আপনার একটি ছোট কারখানা লিখে দিলেন, দান করলেন, যার দাম মনে করুন দশ লক্ষ টাকা, দান করার সময় আপনিও ভাবেননি কৃষ্ণের কি এতই অভাব? দান করার এক বছর পর যদি আপনার কিংবা আপনার ছেলের একটি কঠিন অসুখ হয় যার চিকিৎসা করতে মনে করুণ দু লক্ষ টাকা প্রয়োজন, আপনি কি পারবেন সেদিন এমন বিপদে সেই কারখানাটি বিক্রি করে, আপনার কিংবা আপনার ছেলের চিকিৎসা করতে, সেদিন কি আপনার প্রয়োজনে আপনার সম্পদ কাজে আসবে? যখন আপনি দান করছেন তখন ইসকোন সন্যাসীরা অবশ্যই আপনাকে বলেছে আপনি আপনার সম্পদ টি কৃষ্ণকে দান করছেন, কিন্ত যখন তারা কাগজ কলমে উইল করে নিচ্ছে তখন কিন্ত কৃষ্ণের নাম থাকে না, এই কথা লিখা থাকে যে আপনি স্বেচ্ছায় ইসকোনকে দান করছেন, তাহলে ইসকোন মানে কি কৃষ্ণ? আপনি কি জানেন দান করলেন কৃষ্ণকে আর পাবে ইসকোনের পান্ডারা? সেটাও না হয় নাই ধরলাম কিন্ত যে ইসকোনকে আপনি দশ লক্ষ টাকা দান করলেন , আপনার বিপদের দিনে ইসকোন কি পারবে আপনাকে এক লক্ষ টাকা সাহায্য করতে, আপনার বিপদের দিনে? এক লক্ষ টাকা থাক, দশ লক্ষ টাকা দান করে একদিন অনাহারে থাকলে ইসকোন কি আপনার খবর নিয়ে আপনাকে এক দিনের জন্য এক বাটি ভাত এনে দিবে? তাহলে আপনি কোন ভগবানকে দান করলেন, আপনি একদিন অনাহারে থাকলে আপনাকে একদিনের জন্য খাবার এনে দেয় না, আর তাদের ব্যবহার টা না হয় নাই বললাম, কথার কথা আপনি তাদের আপনার যাবতীয় সম্পদ দান করে যদি কখনো সেই আশ্রমেরই দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্রম্মচারীর কাছে যান সামান্য কয়েকটি টাকার জন্য তখন আপনাকে কি বলবে জানেন, দেখ বাবা আপনি সব কিছু দান করেছেন কৃষ্ণকে, আপনি আমাকে বা আমার নামে দেননি, আর আমি চাকরি করি, আশ্রম থেকে আমার কিছুই যে দেওয়ার পারমিশন নেই, আপনি কৃষ্ণ কৃষ্ণ করেন , সব সমস্যার সমাধান তিনিই করবেন, এমন পরিস্থিতির মধ্যে আপনার লজ্জায় পড়া ছাড়া আর কিছু উপায় থাকে না, কিন্ত সেই মূহুর্তে তার সামনেই তাদের আরাধ্য কৃষ্ণ মূর্তি আছাড় দেওয়া উচিত, তারপর দ্বিতীয় আছাড় দেওয়া উচিত, সেই মহারাজকে যে আমার বিপদের দিনে অর্থাৎ আমার ছেলের নষ্ট কিডনী চিকিৎসার জন্য টাকা না দিয়ে উল্টো সেই মূহুর্তেও কৃষ্ণ কৃষ্ণ করতে বলতেছে তাকে, কথা যখন অনেক হলো তখন একটি বাস্তব সত্য কথা বলি,..... আমার বাড়ীর পাশে একজন গরীব বিধবা মহিলা ছিল যার তিন বিঘার মতো সম্ভল ছিল, আমি মাঝে মাঝে দেখতাম সেই গরীব বিধবা মহিলাটিকে ফুসলে ফুসলে তার তিন বিঘা জমি ইসকোন মন্দিরের নামে লিখে নেয়, মন্দির হবে , মন্দির হবে বলে ইসকোন সন্যাসীরা সময় কাটাতে থাকে, অবশ্য লিখে নেওয়ার আগে ইসকোনের সন্যাসীরা মহিলাটিকে মন্দিরে কৃষ্ণের সেবা করার সব আশ্বাস দিয়েছিল কিন্তু মন্দির নির্মাণ হতে দেরী হওয়ায় সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়, বুড়ি মহিলাটি মন্দির হতে দেরি হওয়ায় চিন্তা করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়ে, পাড়ার লোকজন এসে মহিলাটিকে জমি বিক্রি করে চিকিৎসা করার কথা পরামর্শ দিলেও কাগজ কলমে বিক্রি করতে অসমর্থ হওয়ায় তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি, মহিলাটি অসুস্থ হওয়ার পর ব্রম্মচারীরাও আর পরে আসেনি, এ ভাবে রোগে শোকে ভুগতে ভুগতে আর অনাহারে থাকতে থাকতে মহিলাটি বিনা চিকিৎসায় মারা যায়, ইসকোনরা যেহেতু নাক গলাচ্ছে এবং সেই মূহুর্তে আমার চুপ করে থাকা ঠিক না হলেও আমি এদের শেষ দেখার অপেক্ষায় চুপ করে ছিলাম, আর তখন থেকেই এই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আমার যতদিন জীবন, ইসকোনদের ভন্ডামীর বিরুদ্ধে লড়াই করব, দুঃখ জনক হলেও সত্যি ইসকোনরা মহিলাটির কোন রকমের থাকার মতো ঘরের জায়গাটিকেও গ্রাস করতে এতটুকু দ্বিধা করেনি! শেষে আরও এক দুঃখজনক ঘটনা মহিলাটির অসুস্থ অবস্থায় যখন কোন সন্যাসীর দেখা নেই, খাবার খাওয়ানোর বেলা কেউ নেই, আর যেদিন দুঃখী মহিলাটির মৃত্যু হলো সেদিন কোথা থেকে যেন, চিল পাখির মতো সাধু সন্যাসীর দল এলো, মৃত্যুর পরও মহিলাটির যেন সুখ নাই, লাস নিয়ে রাজনীতি শুরু হলো, ইসকোন সাধুরা বলছে, ও বৈষ্ণবী - ওকে মাটিতে পুতে রাখতে হবে, পাড়ার লোকজন বলছে মহিলাটি বৈষ্ণবী নয়, বৈষ্ণব ধর্মের কোন নিয়ম কানুন পালনও করেনি, তাই তাকে দাহ করতে হবে, পাড়ার লোকদের সংগে এ নিয়ে উভয় পক্ষে হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায় কিন্ত শেষ মেশ , বৈষ্ণবী হোক আর না হোক, জমি যে দান করেছে ইসকোনদের সেই শর্তে আইন গত ভাবে বৈষ্ণব ইসকোনদের নিয়মে মাটিতে সমাধি দেয়া হলো, ভন্ড বৈষ্ণবদের জয় জয় হলো, শেষ দুঃখটি হলো, যে মহিলা জমি দান করেছে মন্দির দেখার স্বপ্নে, তা আর হয়নি কখনো, পাড়ার লোকদের সংগে মৃতদেহ নিয়ে দ্বন্দ্ব হওয়ার , দানকৃত জমিটি শেষ পর্যন্ত ইসকোন বিক্রি করে দেয়! এ সব নিজের চোখে দেখে আমি চোখের জল রাখতে পারেনি, কিন্ত তা আমার অপরাধ হলেও এটির শেষ পর্যন্ত দেখে নেওয়ার জন্যে চুপ করে ছিলাম, নীরবে থাকার এটাই যেন আমার শেষ অপরাধ হয়, এ সব দেখে এবং ভেবে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি , কৃষ্ণের নামে নেয়া জমি অর্থাৎ কৃষ্ণের জমি, ইসকোনরা বিক্রি করে দিতে পারলো কোন আইনে? নিশ্চই কোন ভেলকি খেলা আছে, তাহলে ইসকোন মানেই কি কৃষ্ণ? আর আমি তো দেখলাম, মহিলাটিকে না পারলো দিতে ভগবান সুখ, না পারলো দিতে ইসকোন সুখ! তাহলে হিন্দুরা যাবে কোথায়?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন