রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

বেদে মোহাম্মদ , ভুল তথ্য

অথর্ববেদের কূন্তাপসুক্তে “নবী মুহাম্মাদের অস্তিত্বের” বিশ্লেষণইদানিং অনলাইনের জগতে কিছু জেহদি মুসলমানের আর্বিভাব হয়েছে যারা বেদ সম্বন্ধে অজ্ঞ এবং মূর্খ বিশেষ। এরা বেদে সম্বন্ধে কোনো প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন না করে ইন্টারনেট থেকে কতিপয় বেদের ই-বুক ডাউনলোড করে, হিন্দুদের মধ্যে বেদ সম্বন্ধে মিথ্যাচার করে, সাধারণ হিন্দুদের ব্রেণ ওয়াস করে তাদের দ্বিতীয় মুসলমান বানানোর প্ল্যানে নেমেছে। তারা সরাসরি তাদের এইসব মন্তব্য গুলো কে আর্য সমাজের কাছে পরীক্ষার জন্য রাখতে পারবে না। নিজের কু-বুদ্ধি খাটিয়ে বেদের মূল মন্তব্য কে ভেঙেচুড়ে, বিকৃতি করে, কতিপয় ত্রুটিপূর্ণ বেদের সাহায্য নিয়ে তাদের এইসব মন্তব্য গুলোকে এখন ইন্টারনেটে প্রচার করতে নেমেছে। আজ তাদেরই একটি মন্তব্যের বিশ্লেষণ করে তার শুদ্ধতা যাচাই করা হবে ও তাদের মূর্খামী গুলো তুলে ধরা হবে মাত্র। এটা জাস্ট একটা বিশ্লেষণ মূলক নোট কোনো লিখিত ডিবেট নয়, নোটের উদ্দেশ্য কেবলমাত্র কাটমোল্লাদের দাবীর ত্রুটিগুলোকে তুলে ধরা এবং তার সমাধান করা।অথর্ববেদের ২০.১২৭.১ এর সমাধানমন্ত্রইদং জনা উপ শ্রুত নরাশংস স্তবিষ্যতে।ষষ্টি সহস্ত্রা নবতি চ কৌরম আ রুশমেষুদদ্মহে।।ভাষার্থ(জনাঃ)হে মনুষ্য! (ইদম)যে/এই (উপ)আদর করে {মনদিয়ে অর্থে} (শ্রুত)শোনো যে (নরাশংসঃ)মানুষের মধ্যে প্রশংসা পাওয়া পুরুষ (স্তবিষ্যতে)গর্ব করা যাবে (কৌরম)এই পৃথিবীতে আনন্দ স্থাপনকারী রাজা (ষষ্টিম সহস্ত্রা)ষাট হাজার (চ)এবং (নবতিম)নব্বই {অর্থ্যাৎ অনেক দান} কে (রুশমেষু)ইহাকে অপসারণকারী বীরের বংশ (আ দদ্মহে)আমরা পেয়ে থাকি।ভাবার্থহে মনুষ্য! উত্তম কর্ম সাধনকারী মানুষসংসারে সর্বদা গর্ব পেয়ে থাকে। যে সুবিচারক রাজা কর্মকুশল বীরের বংশকে আদর করে, সুপাত্র কে অনেক দান দেবে।মুসলমানদের অপপ্রচারে জবাবকাটমোল্লা অথর্ববেদের ২০.১২৭.১ থেকে কতগুলি দাবী নিয়ে এসেছে-(ক)ইদম জনা উপাসৃত অর্থঃ ইদম=এখানে, জনা=হে মানুষ, উপাসৃত=লক্ষ্য কর । অর্থাৎ, হে মানব এখানে লক্ষ্য কর, নারাশাংসা স্তাবিশ্যাতে, অর্থঃ নারাশাংসা(প্রশংসিত)এর স্তুতি করা হবে। মন্ত্রটিতে আছে ‘স্তবিশ্যতে’ যা ফিউচার টেন্স বা ভবিষ্যতের বর্নন।অর্থাৎ এমন একজন যিনি আসবেন ভবিষ্যতে। আর নারাশাংসা অর্থ প্রশংসিত, যা আরবী করলে হয় মুহাম্মদ। মুহাম্মদ শব্দের অর্থই প্রশংসিত।(খ)আর একিভাবে নারাশাংসা ও মুহাম্মদ এই দুটি শব্দই হচ্ছে ইউনিক এবং মানব নাম। পৃথিবীর আর কোন ব্যাক্তির নাম নারাশাংসা শোনা যায়নি।(গ)এরপরের অংশ, তাকে পাওয়া যাবে ষাট হাজার নিরানব্বই জন শত্রুর মধ্যে যুদ্ধরত ও সে হচ্ছে কাওরামা বা কৈরম, যার অর্থ হচ্ছে যিনি এক জায়গা হতে আরেকজায়গায় গমন করেন, আরবীতে অর্থ হয় হিজরতকারী। আর মুহাম্মদ সঃ ছিলেন হিজরতকারী।*(১) (ইদম) আর্য সমাজীদের মেনপেজ অনুসারে যার অর্থ “যে/এই”।(২) দ্বিতীয় ভুল, মূল মন্ত্রে “উপ” “শ্রুত” আলাদা আলাদা শব্দ এবং এই দুই শব্দ বৈদিক ব্যাকরণের দিক থেকে আলাদ এবং একসাথে ব্যাবহৃত হবার কোনো কারণ আমি দেখতে পাচ্ছি না, কিন্তু মুসলমানরা এখানে লিখেছে “উপাসৃত”। “উপ” “শ্রুত” অর্থ কি আগেই ব্যাখা করা হয়েছে।(৩)  মূল শব্দটি হল “নরাশংসঃ” যার বৈদিকব্যাকরণ অনুসারে বিশ্লেষণ করলে দাঁড়াই, নর+শংসঃ=মানুষ+প্রশংসা অর্থ্যাৎ মানুষদের মধ্যে যে প্রশংসা পাই, “নরাশংসঃ” দ্বারা রাজাকেই বুঝিয়েছে এখানে, দানবীর ও ধার্মিক রাজা সকলের দ্বারা প্রশংসিত হয়।(৪) আর যদি নরাশংসঃ মানে কোনো মহান মানব কে ধরা হয়, তবে হিন্দুজাতীতে কি মহামানবের অভাব পড়েছে যে বেদুইন অশিক্ষিত মুহাম্মদ কে ধার নিতে যাবে! সনাতন ধর্মে রাম ও কৃষ্ণ কি কম প্রশংসিত। এছাড়াও আছেন আদি-শঙ্করাচার্য যিনি জগৎগুরু নামে প্রশংসিত। নরাশংসঃ=মানুষের মধ্যে প্রশংসা পাওয়া পুরুষ। সাধারণ ভাবে সে যে কেউ হতে পারে।(৫) চলুন কিছুক্ষণের জন্য ধরি, নরাশংস=মহাম্মদ অর্থ্যাৎ মহাম্মদের নাম বেদে আছে। আচ্ছা আপনার নাম কি “পবনবা সমীর বা অনিল বা প্রভজ্ঞন তবে Congratulation আপনার নামের অর্থ বায়ুতাই আপনি বেদ থেকে শুরু করে কুরাণ সব স্থানে আছেন। অবশ্যয় এটা এইসব মূর্খ মুসলমানদের দৃষ্টিকোণে বিচার করে।(৬) আরো মজা পাই ডাঃ জাকিরের দাবী শুনে আল্লা=ব্রহ্মা, এই দাবী তোলার জন্য ইসলামি আলেমরা জাকিরের বিরুদ্ধে ফতোয়া দেয় তাকে কাফের ঘোষণা করে। এখন এইসব গুটি কয়েক মূর্খ মুসলমান এসেছে নরাশংস=মহাম্মদ দাবী করতে। বেশ চলুন ধরে নিলাম নরাশংস ওই মহাম্মদ, এটা কেনো শুধু হিন্দুরা মানবে মুসলমানরাওশুদ্ধ মানুক, নামাজ আদায়ের সময় “মহাম্মদু রাসূলুল্লাহ” না বলে “নরাশংসু রাসূলুল্লাহ” বলুক, সৌদি আরবথেকে ফতোয়া জারী করুক মহাম্মদ কে নরাশংস নামেও ডাকা যাবে, সম্পর্কটা দুইদিক থেকে হওয়া উচিত নয় কি?(৭)  আরো বিনোদনী ব্যাপার, যেখানে ওদের সর্বজ্ঞ আল্লাও বলে যাইনি হিন্দুজাতীর গ্রন্থে মুহাম্মদ আছে, এমন কি ওদের কুরাণ হাদিসেও খুঁজে পাওয়া যায় না হিন্দুজাতীকে, উল্লেখ নাই বেদের নাম, ঋষি, অবতার বা মহান মানবের নাম, কিন্তু দাবী করতে ছাড়বে না বেদে মহাম্মদ আছে!! কিন্তু দেখুন ইহুদি আর খ্রীস্টান জাতীর সঙ্গে কত সুন্দর যোগসুত্র আছে ইসলামী কুরাণে ও হাদিসে। কিন্তু হিন্দুদের ক্ষেত্রে এক তরফা যোগসু্ত্রের দাবী তোলে ওরা, মানে একহাতে তালি বাজানোর ন্যায় ব্যপার।(৮) যে নরাশংসঃ কে নিয়ে এতো ঝামেলা জানেন এই বৈদিক সুক্তে নরাশংসঃ কে? ইন্দ্র আর প্রজাপতি, তবে যেহেতু এই সুক্তে ইন্দ্র কে সরাসরি খুঁজে পাওয়া যায়, তাই কেউ কেউ এই সুক্তে দেবতা হিসাবে ইন্দ্র কেই উল্লেখ করেছেন। বেদের সুক্ত গুলোতে দেবতা একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কারণ এই দেবতা কে কেন্দ্র করে বেদ সুক্ত গুলি স্তুতি করা হয়। এই বিষয় গুলো বেদের সাধারণ পরিচিতি তে শেখানো হয় মানে প্রাথমিক লেভেলে, যা এইসব মূর্খ মোল্লাদের জানার বিষয় নয় এরা প্রাথমিক লেভেল বাদ দিয়ে সরাসরি স্কুলের দরবারে হাজির হয়, যার জন্য এদের এই অবস্থা। এই সুক্তটির বিষয় “রাজধর্মোপদেশ” এখানে রাজার ভূমিকাই আছেন ইন্দ্র। এছাড়াও গোটা বেদে ইন্দ্র কে বহু বহু বার প্রশংসিত স্তুতি করা হয়েছে। আরো একটি বেদের প্রাথমিক লেভেলের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, বেদে অবতারবাদ, নবীবাদের কোনো স্থান নাই।(৯) এখানে “স্তবিষ্যতে” শব্দটি হল  স্তবঃ অর্থ্যাৎ স্তুত করা অর্থ্যাৎ “যে রাজা এই যজ্ঞ/কর্ম অনুষ্ঠিত করবে সেটা তাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে” ভবিষ্যতে গর্ব করে এই অর্থে নয়।(১০) এখানে কূন্তাপ সুক্তের সব নয় কয়েকটি মন্ত্র উপমালঙ্কার যুক্ত যা প্রথম দুটি মন্ত্রের নিচে তুলশিরাম উল্লেখ করে দিয়েছে।এই মন্ত্রগুলিতে কিছু অর্থগত সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়। আর্যসমাজীরা এই সুক্তের সুক্ষবিশ্লেষণ করে (ষষ্টিম সহস্ত্রা) (নবতিম) অর্থ্যাৎ “অনেক দান” অর্থ হিসাবে ব্যাবহৃত করেছেন।আর্য সমাজের মেন পেজে ও তুলশিরাম এই বিষয়ে উল্লেখ করেছেন।গোটা বেদে এইরকম বহু শব্দ আছে যার অর্থ নির্বাচনের জন্য সুক্ষবিশ্লেষণ আব্যশক নইলে ত্রুটিপূর্ণ বেদের অনুবাদ হয়। এইজন্য একমাত্র মহাযোগী+বেদাচার্যদের বেদের অনুবাদ অধিকাংশ শুদ্ধ। তবে কিছু সাধারণ বেদ অনুবাদরা এই সমস্যার সন্মুখীন হতে চান নি, যার জন্য (ষষ্টিম সহস্ত্রা)(নবতিম) এর অর্থ উনারা সংখ্যা হিসাবে উল্লেখ করে ছেড়ে দিয়েছেন। যার দাবী মূর্খ মুসলমানরা এখানে তুলেছে। তবে যেহেতু এটা মুসলমানদের কাছে “বেদের মুহাম্মাদের অস্তিত্বের ব্যাপার” তাইমোল্লারা এটা না মানতেও পারে, তবে তাদের মানা বা না মানাতে কিছুই যায় আসে না। “সুক্ষবিশ্লেষণ” আমাদের কাছে স্বিকার্য।(১১) “কৌরম” এর বৈদিক ব্যাকরণ ভিত্তিক বিশ্লেষণ করলে দাঁড়াই (কূ+রমঃ)= পৃথিবী+আনন্দদায়ক অর্থ্যাৎ পৃথিবীতেযে আনন্দস্থাপন করে। আর “রুশমেষু”=রুশঃ+মেষুঃ=তিক্ত জিনিসের প্রত্যাক্ষণ করা বা পরিত্যাগকরা। আর্য সমাজীরা এটার অনুবাদ করেছেন “ইহা কে অপসারণকারী বীরের বংশ”অর্থ্যাৎ এই দান কে যে বীরের বংশ খুশি মুখে দিয়ে দেয়, এটাই তো হলো “নরাশংসঃ” ও “কৌরম” লক্ষণ। এছাড়া “রুশমেষুর” আরেক অর্থ হয় অশুরিকপ্রবৃত্তির সংহারক হিসাবে কারণ যেহেতু এটা কুন্তাপ সুক্ত (কূণ+তপঃ)=ফলপ্রদ+তপস্যা অর্থ্যাৎ তপস্যার মাধ্যমে ফল লাভ করা, এখানে তপস্যা মানে কর্মমার্গ।(১২) এরপর মুসলমানরা দাবী তুলেছে, “নরাশংসা অউর অন্তিম ঋষি” “কল্কি অবতার অউর মুহম্মদ সাহিব” বই এর ব্যাপারে, লেখক- বেদ প্রকাশ উপাধ্যায়।এটা যতসব ফালতু বইএর সিরিজের মধ্যে একটা। এইসব মুসলমান প্রেমী ব্যাক্তিদের নিজের ব্যাক্তিগত ও মনগড়া মতামত যুক্ত বই যদি হিন্দুদের মানতে হয়, তবে হিন্দুদের তাদের ধর্মগ্রন্থ কে ত্যাগ করতে হবে। যেহেতু উনার বই মুসলমানদের পক্ষে লিখা তাই, মমিনরা বেদ প্রকাশের পা চাটে। মুসলমানরা বলে পন্ডিত বেদ প্রকাশ উপাধ্যায় লিখেছে! একজন পন্ডিত লিখেছে! কিন্তু এটা বলে না এই বইটি ঠিকযতটা প্রসার হয়েছে ঠিক ততটাই সমালোচনা আর বিতর্কের মুখে পড়েছে। উনি এরসব বইগুলোতে নিজের বুদ্ধিখাটিয়ে, নিজের দৃষ্টিকোনে, নিজের ব্যাক্তিগত ও মনগড়া মতামত যুক্ত করে একটা হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সম্পর্ক তৈরী করেছেন মাত্র। যার জন্য কোনো পন্ডিত সভাই তার এই নবরিসার্চ মান্যতা পাইনি, উল্টে সমালোচনা আর বিতর্কের মুখে পড়েছে। এইরকম ফালতু দাবীদারের লম্বা লিস্ট আছে, বেদ প্রকাশ উপাধ্যায় দাবী মুহাম্মাদ কল্কি অবতার, স্বামী বিবেকানন্দের দাবী রামকৃষ্ণ কল্কি অবতার এইদিকে প্রভুপাদের দৃষ্টিতে চৈতন্য নিমাই কল্কি অবতার! হিন্দুরা কি এইসব ফালতু জিনিস মানবে? কিছুদিন আগে হিমাদ্রী শেখর দও দাবী তুলেছে যিশু আর কৃষ্ণ একই সত্তা, খ্রীষ্টানরাকি এইসব ফালতু জিনিস মানবে? ইসলাম ধর্মেও আছে আলি দস্তির দাবী ইসলাম কোনো ধর্ম নয়, (নবি মুহাম্মদের ২৩ বছর বই) এম.এ.খানের দাবী ইসলাম সন্ত্রাসের ধর্ম (জিহাদ বই) আনোয়ার শেখের দাবী ইসলাম আরবদের জাতীয় আন্দোলন। মুসলমানরা কি মানবে এইসব? ভারতে দেওবন্দীদের সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের মুখপাত্র মুফতি ইলিয়াস সরাসরি টিভি ক্যামেরার সামনে দাবি করেছে যে – “মুসলিমদের প্রথম পূর্বপুরুষ হচ্ছে হিন্দুদের ভগবান শিব” মুসলমানরা কি মানবে এইসব? মাথাই বুদ্ধি থাকলে বেদে মুসলমানরা নিজের নাম খুঁজতে পারবে কিন্তু তার মান্যতা কেউ দেবে না, উল্টে সমালোচনা আর বিতর্কের মুখে পড়বে। আর না সেটা হিন্দুদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।অথর্ববেদের ২০.১২৭.২-৩ এর সমাধানমন্ত্রউষ্ট্রা যস্য প্রবাহণো বধূমন্তো দ্বির্দশ।বর্ষ্মা রথস্য নি জিহীড়তে দিব ঈষমাণা উপস্পৃশঃ।।২এষ ইষায মামহে শতং নিষ্কান্দশ স্ত্রজঃ।ত্রীণি শতান্যর্বতাং সহস্ত্রা দশ গোনাম।।৩ভাষার্থ(যস্য)যে রাজার (রথস্য)রথ কে (প্রবাহণঃ)চালিত হয় (ঈষমাণাঃ)শীঘ্রগামী (উপস্পৃশঃ)নিয়ে যায় (বধূমন্তঃ)উটনিয়ো সঙ্গে (দ্বির্দশ)২০টি (উষ্ট্রাঃ)উট (দিবঃ)উন্নত মানুষের (বর্ষ্মা=বর্ষ্মাণম)উচ্চপদ বা উচুঁস্থান {উচ্চ+পদ=উচুঁ+স্থান} কে (নি জিহীড়তে)অপমান করে থাকে {লজ্জাদেয়অর্থে}।।২।।(এষঃ)যে রাজা (ইষায)উদ্যোগী পুরুষ কে (শতম)শত (নিষ্কন)সুবর্ণ মুদ্রা (দশ)দশটি (স্ত্রজঃ)মালা (আর্বতাম ত্রীণি শতানি)তিন শত ঘোড়া এবং (গোনাম দশ সহস্ত্রা)দশ সহস্র গো-সমূহ (মামহে)দান দিয়েছে।।৩।।ভাবার্থরাজা ২০টি উট উটনী প্রভৃতি কে রথে ব্যাবহার করে। রথকে অনেক উদ্যম করবে এবং উদ্যোগী মানুষদের অনেক প্রকারের উচিত দান/পুরস্কার দেবে ।।২।।৩।।মুসলমানদের অপপ্রচারে জবাবএবার কাটমোল্লা অথর্ববেদের ২০.১২৭.২-৩ থেকে কতগুলি দাবী নিয়ে এসেছে-(ক) “উষ্ট্রা ঈয়াশা প্রবাহানো” এর অর্থনাকি “উট দ্বারা প্রবাহিত তাহার বাহন”“বধূ মন্তো দ্বির্দশ” এর অর্থ নাকি “১২জন স্ত্রী সমেত”(১)উট দ্বারা প্রবাহিত তাহার বাহন লিখছে কিন্তু পাঠার্থে বাহন যা এখানে রথ নামে আছে তারই উল্লেখ করে নাই এবং এরই সঙ্গে ঈষমাণাঃ এর অর্থটাই হজম করেফেলেছে, যার অর্থ শীঘ্রগামী। এর সঙ্গেআবার দাবীও তুলেছে “নরাশংসঃ” বাস করবেন মরুভূমিতে কারণ এখানে উটের রথের কথা বলা হয়েছে, সেটার বিশ্লেষণ পরে করা হবে লক্ষ্য রাখবেন।(২) তারপর আবার লিখছে- “বধূ মন্তো দ্বির্দশ” এর অর্থ নাকি “১২ জন স্ত্রী সমেত”।মজার বিষয় “দ্বির্দশ” মানেও ১২ হয়! যেখানে সংস্কৃতে দ্বাদশ এর অর্থ ১২। এখানে “দ্বির্দশ” মানে (দ্বি+দশ=২X১০=২০)। তাহলে মমিনের দাবী অনুসারে মুহাম্মাদের ২০টি বিবি ছিলো! আর “বধূমন্তঃ” শব্দটা মূল মন্ত্রে একসঙ্গে একই সঙ্গে আছে, যা মোল্লাটা হজম করে ফেলেছে, আর দুটো শব্দ বৈদিক ব্যাকরণের দিক থেকে মৌলিক শব্দ, একে আলাদা ভাবে লিখা যাবে না। এইবৈদিক মন্ত্রে তো “বধূমন্তঃ” রথের বাহন হিসাবে ব্যাবহার উল্লেখ আছে, তাহলে কেউ কি তার ২০টি যুবতি স্ত্রী দিয়ে রথ টানাবে?এখানে কূন্তাপ সুক্তের সব নয় কয়েকটি মন্ত্র উপমালঙ্কার যুক্ত যা প্রথম দুটি মন্ত্রের নিচে তুলশিরাম উল্লেখ করে দিয়েছে। এই টাইপের মন্ত্রগুলিতে কিছু অর্থগত  সমস্যার সন্মুখীন হতে হয়। আর্যসমাজীরা এই সুক্তের সুক্ষবিশ্লেষণ করেছেন মাত্র, যা এই মোল্লার পছন্দ হয়নি। এবার আর্যসমাজীদের সুক্ষবিশ্লেষণ টা একটু দেখবো। ‘বধূ’ শব্দটি আরেকটি বিশেষ অর্থ আছে যা শুধু স্ত্রী লিঙ্গকে প্রকাশ করে মাত্র। আর ‘মন্তঃ’ শব্দটি অর্থ ‘ইহা’। এই মন্ত্রে প্রথম অর্ধে ইহা+রথের বাহন হিসাবে উট কে বোঝানো হয়েছে, তাই উটের স্ত্রী লিঙ্গ মানে “উটনি” যা “বধূমন্তঃ” এর অর্থ স্থির করেছে আর্যসমাজীরা। এছাড়া এমন কোনো শাস্ত্রীয় বিধান আমার আছে বলে যানা নাই, যেখানে ২০টা বিবাহ আর সেই স্ত্রীদের দিয়ে রথ টানানোর অনুমতি দেয়।(৩) এছাড়া মোল্লা যা এখানে দাবী তুলেছে“উটের রথ”। মোল্লার ক্ষমতা নাই এমন একটি হাদিস দেখানো, যেখানে বর্ণনা করাহবে মুহাম্মাদ ২০টি উটের টানা রথে চেপে যাতায়াত করতেন। হ্যাঁ, এবার মোল্লা যদি বলে উটের রথ আর উটে চাপা একতবে সেই বিচারে এটাও প্রমানিত হয় চাল আর চালতা এক, আম আর আমড়া এক, গুড় আর গু এক।(৪) সম্ভবত, এখানে উষ্ট্রা মানে বাহন রূপে ব্যাবহৃত উট নয়, এই মন্ত্রটাই রহস্যা আবৃত তাই যদি সুক্ষবিশ্লেষণ করি, যদিও এটা আমার দিকের সুক্ষবিচার আর্যসমাজের নয়। কারণ মরুভূমির বালিতেউট চললেও বালিতে রথের চাকা চলবে না অথচ এই মন্ত্রে উল্লেখ করা হচ্ছে রথ চলবে শীঘ্রগামী এবং অন্য পশুর টানা রথের তুলনাই উটে টানা রথ শীঘ্রগামী নয়। আবার এটা বলা হচ্ছে উটের রথ এমন উন্নত মানের হবে যা উন্নত মানুষের উচ্চপদ বা শিখর কে অপমান করবে। তাই সম্ভবত এখানে উষ্ট্রা মানে কোনো শীঘ্রগামী পশু এবং উষ্ট্রা রথ মানে কোনো উন্নতমানের রথকে বোঝানো হয়েছে।(৫) এরপর মোল্লা দাবী তুলেছে, আর্যসমাজীরা নাকি “বধূমন্তো দ্বির্দশ” এর অর্থ নাকি “উটের ১২ জন স্ত্রী” এই ভাবে অনুবাদ করেছে। আমি তো এইরকম অনুবাদ আর্যসমাজীদের কোথাও পেলাম না, ইনফ্যাক্ট আমি আর্যসমাজীদের বেদের অনুবাদ থেকে প্রতিটি মন্ত্রের ব্যাখা দিয়েছি এবং তাদের বিশ্লেষণের কারণ সমেত ব্যাখা দিয়েছি।(৬)এরপর মূর্খ মোল্লা দাবী তুললো মুহাম্মাদ যুদ্ধ করতে পারদর্শি ছিলো তাই সে ক্ষত্রিয়।খুব সুন্দর মুহাম্মদএকটা গুণে ক্ষত্রিয় হয়ে গেলো, বাকি গুণ গুলো কি আর দরকার নাই!(খ) এরপর মোল্লা আরেকটি কাটাযুক্তি শুনুন- “ভবিষ্যতে কোন নারাশাংসা আসবে না বরং সে এসে গেছে এর প্রমান তার বাহনহবে উট। আর এখন মাইলকে মাইল পাকা সড়ক হওয়া রাজস্থানে উটের বাহন দেখা যায় না। উঠের বাহন এখন শুধু ট্যুরিষ্ট শো।তাই আধুনিক যুগে এসে উটএর বাহনে সে চড়ে বেরাবে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। আবার রাজ ঋষি কনসেপ্ট, রাজা কর্তক উপহার, ময়দানে ষাট হাজার শত্রুর সাথে যুদ্ধে প্রমান করে যে এটি আধুনিক চিত্র নয়। অর্থাৎ নারাশাংসা এমন একজন যিনি এসে গেছেন। তাহলে এইসব ভন্ডরা এবার তাহলে দেখাক কোথায় সেই নারাশাংসা?”*সাধে কি আর মোল্লা কে মূর্খ বললাম! প্রথম মন্ত্রটা একবার দেখা যাক – (জনাঃ) হে মনুষ্য! (ইদম) যে (উপ) আদর করে (শ্রুত)শোনো যে (নরাশংসঃ)মানুষের মধ্যে প্রশংসা পাওয়া পুরুষ (স্তবিষ্যতে)গর্ব করা যাবে.*সাধারণ দিক দিয়ে বিচার করলেএটা তো চিরন্তন সত্য, যাকে নিয়ে মানুষ প্রশংসা করবে তাকেই নিয়ে ওরা গর্ব করবে। এখানে নরাশংসঃ কোনো বিশেষ ব্যাক্তি নাকি! এই নরাশংসঃ যে কেউ যে কোনো কালে হতে পারে! তবে এই সুক্তটির বিষয় “রাজধর্মোপদেশ” এখানে রাজার ভূমিকাই আছেন ইন্দ্র, যিনি হচ্ছেন এই সুক্তের স্তুতা অর্থ্যাৎ দেবতা, যিনি এখানে “নরাশংসঃ” নামে আখ্যায়িত হয়েছেন। এই সুক্তটি সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলছে বৈদিক যুগের রাজধর্মের প্রেক্ষাপট কে কোনো বেদুইন অশিক্ষিত, সন্ত্রাসের মাধ্যমে নতুন একটি ধর্ম স্থাপন কারী আরবি মুহাম্মদ কে নয়।*আর মোল্লা কোন মন্ত্রের কোথাই পেয়েছে “নরাশংসের বাহন হবে উট” এখানে তো বলা আছে “উটে টানা রথের কথা”। আর রাজস্থানে এখন মাইলকে মাইল পাকা সড়ক হয়েছে তো কি হয়েছে! মরুভূমির বালিতে রথের চাকা চলবে না কিন্তু পাকা সড়কে ঠিকই চলবে।মুসলমানদের অপপ্রচারে জবাবএবার কাটমোল্লা কতগুলি দাবী নিয়ে এসেছে-(খ) মামহে ঋষি=মুহাম্মাদ(১) যা ওদের ন্যায় আরেক কাটাযুক্তি। বেশ ঠিক আছে হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে প্রতিটি ঋষি বৈদিক ধর্মীয় বংশভূত, তাহলে মুহাম্মদ কি প্রাচীন হিন্দুজাতীর বংশভূত ছিলো? আর মুহাম্মাদ যদি বৈদিক ঋষি হয় তবে মুসলমানরা কেনো মুহাম্মাদ কে নবী বা রাসূল বলে কেনো! সরাসরী “ঋষি মুহাম্মাদ” বললে পারে! যতদূর আমি জানি ঋষি শব্দটাই আরবিদের জন্য “কুফুর”।(গ) এরপর মোল্লা আরেকটি কাটাযুক্তি শুনুন- “ঋষি অর্থ যিনি জাগতিক দুনিয়ারবাইরের জ্ঞানকে লব্ধ করেন। আর ক্ষত্রিয় গুন হচ্ছে যে যুদ্ধ করতে পারদর্শি। এই দুটা গুনই যে শেষ নবি হযরত মুহাম্মদ সঃ এর সাথে যায় এটা কি এরা অস্বীকার করতে পারবে?”(১) বেশ চলুন মানলাম মুহাম্মদ ঋষি! এর সঙ্গে মোল্লা এটাও স্পস্ট করুক, মুহাম্মদ কোন আদি বৈদিক ঋষির বংশধর। বেদ সংহিতার ঋষিরা আদি ৭-৯ ঋষির পর্যায়ক্রমিক বংশধরদের মধ্যে কেউ, মুহাম্মদ কোন আদি বৈদিক ঋষির বংশধর? আর শুধু যুদ্ধ করতে পারলে ক্ষত্রিয় হওয়া যায় নাকি! আমি যতদূর জানি শৌর্য, তেজ, ধৈর্য, দক্ষতা, যুদ্ধে অপলায়ন, দানও শাসন ক্ষমতা এইগুলোও থাকা চাই। আর মুহাম্মদ তো মরার ভয়ে মক্কা ছেড়ে মদিনাতে পালিয়ে গিয়েছিলো এটাও কি ক্ষত্রিয়ের ধর্ম!(২) আর শুধু ঋষি শব্দের অর্থ দিয়ে কি যাকে তাকে ঋষি, তাও আবার বেদে বর্ণিত ঋষি মানে বৈদিক ঋষি প্রমান করা যায়। বৈদিক ঋষি্রা পরমউপকারী+ শাস্ত্রজ্ঞ+ তপস্ত্রী+ বেদ মন্ত্রের দ্রস্টা+ শাস্ত্রপ্রনেতা+ রচয়িতা+ যোগী ছিলেন। আর মুহাম্মদ কয়টি বেদ মন্ত্রের দ্রস্টা? বস্তুত মামহে ঋষি নামে কোনো ঋষি নাই!(৩)এরপরমোল্লা আরেকটি কাটাযুক্তি শুনুন- “তেমনি Mamah যে Mahmad এর সংস্কৃত আলেখ্য এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই”এখানে সন্দেহ পর সন্দেহ আসছে এই এখানেএসেছে সন্দেহ নাই বলতে। সংস্কৃত থেকে ইংরেজিতে পরিবর্তন কালে শব্দের পরিবর্তন ঘটে যে কুবুদ্ধির এই এখানে সাহায্য নিয়েছে মূলাটা। সংস্কৃতশব্দটা হচ্ছে “মামহে= ম+আ+ম্+হ+এ” যার জীবনেও পরিবর্তন করে, “মুহাম্মাদুর” এটা ওদের আরবি উচ্চারণের কালেমা তে লিখা আছে।“মুহাম্মদ=ম+উ+হ+আ+ম+ম+দ” বা “মুহাম্মাদুর=ম+উ+হ+আ+ম+ম+আ+দ+উ+র” আনা যাবে না, এমন কোনো সংস্কৃতের নিয়ম আছে বলে আমার জানা নাই যেখানে প্রথমেই ‘মা’ কে ‘মু’ উচ্চারণ করা হয়। আর মুহাম্মদ সংস্কৃতে পরিবর্তন হয়ে মামহে হবে কেনো, মামহে টাই তো সংস্কৃত শব্দ। এই মন্ত্রের ভাষার্থে মামহে অর্থ ‘দান দেই’ এই অর্থে হিসাবে, যা একটি ক্রিয়াপদ হিসাবে ব্যাবহার। এখানে কেউ যদি বিশেষ্য হিসাবে ‘মামহে’ কে ‘মামহে ঋষি’ হিসাবে উল্লেখ করে, তবে সেটা তার ব্যাক্তিগত মত যা ভাষার্থে গঠনের নিয়মের বাইরে। কেউ যদি এই ভাবে বেদের অনুবাদ করে তবে তার অনুবাদে সে নিজে জড়িয়ে যাবে। বস্তুত তার এই অনুবাদটা ত্রুটিপূর্ণ হিসাবে স্বিকার্য হবে। এছাড়াও ‘মামহে ঋষি’ এই মন্ত্রে এমন কোনো শব্দ নেই যার অর্থ ঋষিবাচক, আর যদি এখানে মামহে কে মামহ ঋষি মানে বিশেষ্য হিসাবে ব্যাবহার হয়,তবে ক্রিয়াপদ কোনটি?(ঘ) এরপর মোল্লা আবার এসেছে বেদ প্রকাশের আরেক ব্যাক্তিগত ও মনগড়া মন্তব্য নিয়ে- “১০০ স্বর্নমুদ্রা, ১০ টী গলার হার, ৩০০ ঘোড়া, ১০ হাজার গরু, পন্ডিত বেদ প্রকাশ উপোধ্যায় এর মতে এখানে স্বর্নমুদ্রা, হার, অশ্ব ও গাভী-এইগুলি পার্থিব অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে না । কারণ এই সকল পার্থিব বস্তু লাভের দ্বারা কোন ঋষির মাহাত্ন প্রকাশ পায় না, বরং তাহার পার্থিব-কলুষতাই প্রকাশ করে প্রকৃতপক্ষে এইগুলি অলংকারিক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে”(১) বেদ প্রকাশের এইসব ব্যাক্তিগত ও মনগড়া মন্তব্যের জন্যতো উনি পন্ডিতদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন। রামায়ণ, মহাভারত এমন কি বৈদিক ব্রাহ্মণ গ্রন্থে অনেক প্রমান পাওয়া যায় যেখানে রাজা ঋষি, মুনি ও ব্রাহ্মণদের অনেক দান অর্পিত করেছেন এবং ঋষি, মুনি ও ব্রাহ্মণরা খুশিমনে তা গ্রহণ করেছেন। এটা একদিকে যেমন রাজধর্মের অংশ ও সমাজে রাজার সন্মান বৃদ্ধি করে তেমনি অপর দিকে ইহা সমাজে ঋষি, মুনি ও ব্রাহ্মণদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে। রাজা ধেনুদান, স্বর্ণমুদ্রাদান, হিরণ্যদান, মাল্যভূষণাদিদান, নানা বিধি পুরস্কারদান উপহার দান প্রভৃতি দিয়ে সমাজে ঋষি, মুনি ও ব্রাহ্মণদের মর্যাদা বৃদ্ধি করতেন। শ্বেতকেতু, সোমশুষ্ম ও যজ্ঞবল্ক্য কে রাজর্ষি জনক অগ্নিহোত্র বিষয়ে শিক্ষাদান করিয়েছিলেন এবং রাজর্ষি সকল ঋষি কে দান দিয়ে পরিতুস্ট করিয়েছিলেন, এদের মধ্যে যজ্ঞবল্ক্য কে রাজর্ষি জনক শতধেনু দান করেছিলেন। বস্তুত ৩নং মন্ত্রে কি পরিমাণের দান দেবে তা এখানে উল্লেখ আছে।(ঙ) এরপর মোল্লা আরেকটি কাটাযুক্তি শুনুন- “বেদ সম্পর্কে অশিক্ষিত এইসব গাধারা বৈদিক স্কলারদের ভাষ্য সম্পর্কেই অজ্ঞ। একজন ঋষি দশ হাজার গরু দিয়ে কি করবে? ডেইরি ফার্ম খুলবেনাকি?”(১) বেদ সম্পর্কে কে “অশিক্ষিত” আর কে “গাধা” আর কে বেদ ভাষ্য “সম্পর্কেই অজ্ঞ” এর জবাব আপনি খুঁজে নেবেন সম্পূর্ণ নোটটা পড়ে। মোল্লা বোধয় জানে না বৈদিক যুগে টাকা-পয়সার অতো প্রচলন ছিলো না, প্রচলন ছিলো “বিনিময় প্রথা”। আমি আপনার কাছে থেকে ২০কেজি চাল নিলাম আমি আপনাকে একটা ধেনু দিলামবা আমি আপনার কাছে থেকে কতগুলো বস্ত্রনিলাম আমি আপনাকে একটা অশ্ব দিলাম। এইভাবে সম্পদের আদান প্রদান হতো, বৈদিক যুগের ধেনু বৃষ অশ্ব মেষ প্রভৃতি পশুদের উপকারীগুণের জন্য এদের খুব গুরুত্ব ছিলো এবং এদের সম্পদহিসাবে বিবেচিত হতো। বৈদিক ঋষি মুনি ব্রাহ্মণরা না করতো কোনো চাকরী, না করতো চাষবাস, না করতো চুরি-ডাকাতি পড়ে থাকতো সারাদিন বেদের শিক্ষা দানে, যাগ,যোগ, যজ্ঞ, তপস্যা এইসব কাজে, তাহলে উনারা জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ,খাবার কোথাই পেতো! না হাওয়া জল খেয়ে জীবনধারণ করতো! এইসব দানের সামগ্রী ছিলো উনাদের জীবনধারণের পূঁজি অভাবে ওনারা ভিক্ষাবৃত্তিও করতেন। তাও আবার নিজেদের পেট চালানোর ব্যাপার হলেও হয়, বৈদিক ঋষি মুনি ব্রাহ্মণদের আশ্রমে থাকতো আশ্রমধর্ম পালনকারী শিষ্যরা মানে চতুরাশ্রমের ব্রহ্মচর্য পর্যায় পালনকারী শিষ্যরা,এরা কেবল ব্রহ্মচর্য ব্রত পালনের শেষে সামান্য কিছু গুরুদক্ষিণা দিতো আর যতদিন আশ্রমে থাকতো ততদিন তাদের পালনের দায়িত্ব থাকতো আশ্রমের মালিকের উপর। এবার যদি বৈদিক ঋষি মুনিব্রাহ্মণরা এইসব জীবনধারণের পূঁজি গুলো গ্রহণ না করে তবে নিজের+অতো গুলোশিষ্যের পেট চালাবে কেমন করে? মহাভারতে বর্ণিত আছে একবার ঋষি দূর্বাসা তার ১০ হাজার শিষ্যদের নিয়ে ধৃতরাষ্ট্রের দরবারে উপস্থিত হয়েছিলেন। সাধে কি মোল্লাপ্রেমী বেদ প্রকাশ এইসব নবরিসার্চের জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছেন।(চ) এরপর মোল্লা আরেকটি মন্তব্য আমদানি করেছে- “প্রায় সকল স্কলাররাই একমত। তুলসীরাম এই মন্ত্রগুলোকে Mystical বলে আখ্যায়িত করেছে। আচার্য্য শ্রী রাম শর্মা এই সুক্তের কমেন্টারিতে লিখেছেন, এই কুন্তাপ সুক্তটি ও এর সম্বন্ধিত শব্দগুলোর অর্থ আক্ষরিক নয় বরং সাংকেতিক”(১) আমি তো তুলশিরামের ৩নং মন্ত্রের নিচে এইরকম কোনো পাদটীকা তো পেলাম না, উনি ১ ও ২নং মন্ত্রের নিচে মন্তব্যটি উল্লেখ করেছেন।(২) আর আচার্য্য শ্রী রাম শর্মা সুক্তটার যদি বুঝতে না পেরে, সুক্ষবিশ্লেষণ এরিয়ে গিয়ে লিখে দিলো সুক্তটা রহস্যা আবৃত, তবে আর কেউ নাই নাকি যে এই রহস্যের উন্মোচন করতে পারবে না!এছাড়ও রাম শর্মা এখানে কোথাও আক্ষরিক নয় এমন লেখেননি। বরং লিখেছেন"উনকা তথা উনসে সম্বন্ধিত কথানকো কে সংকেত সহিত মন্ত্রার্থ করনে কে প্রয়াস কিয়া গয়া হৈ"রামশর্মা বলেছেন "এই সূক্তের বিভিন্ন বর্গের বিভিন্ন নাম রয়েছে। এর দ্বারা কি বোঝায় তা এখানে সংকেত সহ অনুবাদের প্রয়াস করা হল।" যেমন প্রথম তিন মন্ত্রের নাম "নারাশংস্য", পরের তিন মন্ত্রের নাম "রেভ্য", পরের চার মন্ত্রের নাম "পারিক্ষিত্য" এবং শেষ চার মন্ত্রের নাম "কারব্য"।এছাড়াও উনি ত্রুটিপূর্ণ বেদের অনুবাদকরেছেন“মামহে ঋষি” যে নামের কোনো ঋষিইনাই মন্তব্যটা তো তিনিও তুলেছেন। বেদভাষ্যে যার তার আগে “ঋষি” লাগিয়ে দিলে হবে! নইলে উনি এমনি এমনি মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর বেদভাষ্য পড়ে প্রশংসাতে পঞ্চমুখ হবেন! বস্তুত উনি যেসব বিশ্লেষণ গুলো করার সামর্থ্য প্রকাশ করেন নাই মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী সেইসব সামর্থ্য দেখিয়েছিলো, যার জন্য উনি দয়ানন্দ সরস্বতীর বেদভাষ্য পড়ে প্রশংসাতে পঞ্চমুখ। তবেযদি এই গোটা সুক্তটাতে আক্ষরিক অর্থ প্রয়োগ করা হয় তবে সেই সুক্তটা “ক্রীড়াসুক্ত” নামে পরিচিত হবে তখন সেটা আর “কুন্তাপ সুক্ত” থাকবে না। আর আচার্য্য শ্রী রাম শর্মা এই সুক্তটা “কুন্তাপ সুক্ত” হিসাবে অনুবাদ করেছেন “ক্রীড়াসুক্ত” হিসাবে নয়। তবে যেই দিকে যান কেনো বেদে “মহাউন্মাদ” কে কোনো “উন্মা্দ” ছাড়া কেউ খুঁজে পাবে না। কুন্তাপ সুক্তের আরেক নাম যেক্রীড়াসুক্ত তুলশিরাম দুটোনামই ব্যাবহার করেছেন।অথর্ববেদের ২০.১২৭.৪ এর সমাধানমন্ত্রবচ্যস্ব রেভ বচ্যস্ব বৃক্ষে ন পক্বে শকুনঃ।নস্টে জিহ্বা চর্চরীতি ক্ষুরো ন ভুরিজোরিব।।ভাষার্থ(রেভ)হে বিদ্বান! (বচ্যস্ব)উপদেশ করো (বচ্যস্ব)উপদেশ করো (ন)যেভাবে (শকুনঃ)পক্ষী (পক্বে)ফলধারী (বৃক্ষে)গাছের দিকে চেয়ে থাকে। (নস্টে)ক্লেশের বিস্তারের ফলে (ভুরিজোঃ)ধারণ ও পোষণকারী [স্ত্রী-পুরুষ] (এব)শুধুমাত্র (জিহ্বা)জীভ (চর্চরীতি)চলিত হয়ে থাকে [জীভ চর্চা] (ন)যেভাবে (ক্ষুরঃ)ছুরা [কেশের উপর চলে]।ভাবার্থবিদ্বান স্ত্রী-পুরুষ(মা-বাবা)হাঁসি মুখে সন্তান ইত্যাদিদের কে সবসময় সৎউপদেশ দিয়ে থাকে। যেভাবে ফলধারী গাছে উপরে পক্ষী খুশি হয়ে বলে থাকে এবং সৎউপদেশ দ্বারা ক্লেশো কে এমন ভাবে কেটে ফেলো যেভাবে নাপিত কেশরাশি কে ছুরা দিয়ে কেটে ফেলে।মুসলমানদের অপপ্রচারে জবাব-এবার কাটমোল্লা অথর্ববেদের ২০.১২৭.৪ থেকে আরেকটি দাবী নিয়ে এসেছে-“এরপর ৪ নাম্বার মন্ত্রে তাকে বলা হয়েছে ‘রেভ’ যার অর্থ প্রশংসাকারী। আরবীতে করলে হয় আহমদ, যেটি মুহাম্মদ সঃ এর আরেকটি নাম। কোরানে তাকে ৪ বার মুহাম্মদ ও ১ বার আহমদ বা প্রশংসাকারীবলে ডাকা হয়েছে”(১) মোল্লার ভাষাই নামের অর্থ মিললে চলবে বাক্তিগত বৈশিষ্ট্যগুলো দেখার দরকার নাই। সেইভাবে বিচার করলে ভারত-পাক সীমান্তের অঞ্চলে “Jaieh-e-mohammed” নামক একটি ইসলামী সন্ত্রাসী গ্রুপ আছে, যার অর্থ “মুহাম্মাদের আর্মি” সেই অর্থে দাঁড়াই মুহাম্মাদ সন্ত্রাসী গ্রুপের লিডার!(২) এখানে রেভের অর্থ স্তুতা, বিদ্বান বা প্রশংসক হিসাবে ব্যাবহার হতে পারে কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এটা কাকেউদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছে। এখানে রেভ সেই যে সৎউপদেশ দ্বারা মানুষের মনের ক্লেশ কে দূর করে, যার ভূমিকাই এই অনুবাদে আছে স্ত্রী-পুরুষ(মা-বাবা) কোনো অশিক্ষিত বেদুইন মুহাম্মাদ নয়।অথর্ববেদের ২০.১২৭.৫ এর সমাধানমন্ত্রপ্র রেভাসো মনীষা বৃষা গাব ইবেরতে।অমোতপুত্রকা এষামমোত গা ইবাসতে।।ভাষার্থ(বৃষাঃ)বলবান (গাবঃ ইব)বৃষের সমান (রেভাসঃ)বিদ্বান লোক (মনীষাঃ)বুদ্ধি কে (প্র ঈরতে)এগিয়ে নিয়ে যায়। (অমোত)হেবন্ধন বর্জিত (আমোত)হে মুক্ত মনুষ্য! (এষাম)এই [বিদ্বানদের] (পুত্রকাঃ)পুত্র (গাঃ)বিদ্যা এবং ভূমিকে (ইব)অবশ্যই (আসতে)সেবা করবে।ভাবার্থযেভাবে বলবান বৃষ আগে এগিয়ে যায়, মনুষ্য বিঘ্নো থেকে মুক্ত হয়ে বুদ্ধি কে অনেক প্রকারভাবে বৃদ্ধি করবে এবং সন্তান ইত্যাদিদের কে যোগ্য বিদ্বান এবং রাজ্যাধিকারী বানাবে।মুসলমানদের অপপ্রচারে জবাব-এবার কাটমোল্লা অথর্ববেদের ২০.১২৭.৫ থেকে আরেকটি দাবী নিয়ে এসেছে-“৫ নাম্বার মন্ত্রটি গ্রিফিন্থ এভাবে অনুবাদ করেছে “শিকারী-দেখিয়া যেমন শিকারগণ বলশালী বৃষবৎ করিয়া পলায়ন ।। গৃহেতে থাকে তাহাদের কেবল বৎসগণ অপেক্ষা করিয়া থাকে গাভীদের জন্য” এরআগের মন্ত্রে গরু যে আক্ষরিক নয় তা এই মন্ত্রেই প্রমানিত হয়। গাভীদের জন্য তাদের বৎসগণ অধীর আগ্রহে বাড়িতে অপেক্ষা করছে, এটা খুব স্পষ্টভাবে কুরাইশদের অত্যাচারে হিজরতকারী সাহাবীদের পরিজনদের কথা বলেছে, যারা গৃহে বসে তাদের ফিরে আসার অপেক্ষা করছিল।অষ্টম হিজরিতে মক্কা বিজয়ের পর সাহাবীরা পুনরায় নিজ মাতৃভুমিতে এসে ফেলে আসা সন্তান সন্ততি ও পরিবার পরিজনদের সাথে মিলিত হবার সুযোগ পায়।(১) বেশ তো এই ভাবে তিল কে তাল করে বেদের মন্ত্রগুলো মহাউন্মাদের ইতিহাস বানিয়ে ফেললে হয়।মনে হয় কাটমোল্লাদের এটাই করতে বাকি রেখেছে এখনো।(২) কিন্তু এখানে তো আক্ষরিক অর্থ হিসাবে কোনোটাকে তুলে ধরা হয়নি। মোল্লা এখানে বলতে চাইছে গরু আক্ষরিক অর্থ হিসাবে এখানে ব্যাবহার হয়েছে! (বৃষাঃ)বলবান+(গাবঃ ইব)বৃষের সমান কোনোটাও এখানে আক্ষরিক অর্থ নয়। বাকি থাকে (গাঃ), এর অর্থ “সাথে দাঁডিয়ে সম্পর্কিত” অর্থে এখানে ব্যাবহার হয়েছে। এখানে (এষাম) বিদ্বানদের উদ্দেশ্য বলা হয়েছে, পরের মন্ত্রে আবার (এষাম) কে (গোবিদম) ভূখন্ড কে প্রাপ্তকারী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, সরল পাঠার্থ গঠনের সুবিধার্থে তাই (গাঃ)=বিদ্বান+রাজ্যাধিকারী অর্থে ব্যাবহার হয়েছে। এগুলো কি আক্ষরিক অর্থ? এখানে দুটো অনুবাদ আছে এক গ্রিফিন্থের আরেকটি আর্য সমাজীদেরমেন পেজের এবার নিজের মিলিয়ে দেখুন! মজার ব্যাপার বেদের প্রাথমিক লেভেলে শিখানো হয় বেদে প্রতিটি মন্ত্রে কিছু না কিছু জ্ঞানমূলক শিক্ষা লুকিয়ে থাকে, যার জন্য বেদের আরেক নাম “জ্ঞান”। যা আর্য সমাজীরা কিন্তু পরিস্কার ভাবে তুলে ধরেছে!অথর্ববেদের ২০.১২৭.৬ এর সমাধানমন্ত্রপ্র রেভ ধী ভরস্ব গোবিদং বসুবিদম।দেবত্রেমাং বাচং শ্রীণীহীষুর্নাবীরস্তারম।।ভাষার্থ(রেভ) হে বিদ্বান! (গোবিদম) ভূখন্ড কে প্রাপ্তকারী এবং (বসুবিদম)ধন কে প্রাপ্তকারী, (ধীম)বুদ্ধি কে (প্র)ভালো করে (ভরস্ব)ধারণ করো। (দেবত্রা) বিদ্বানদের বংশ (ইমাম)এই [পূর্বোক্ত] (বাচম)বাণী কে (শ্রীণীহি)রপ্ত করো (ইষঃ ন)যেভাবে তীর (অবীঃ)প্রবেশযোগ্য লক্ষ্য কে (অস্তারম)তীর চালকের জন্য [রপ্ত করতে হয়]ভাবার্থমনুষ্য বিদ্বানদের মধ্যে বসে নিশ্চিতকরো কিভাবে যত্ন বা পরিচর্যা করলে রাজ্য ও ধনের প্রাপ্তি সুফল দেবে। যেভাবে চতুর ধনুধারীর তীর লক্ষ্য তেই গিয়ে পৌঁছায়।মুসলমানদের অপপ্রচারে জবাব-এবার কাটমোল্লা অথর্ববেদের ২০.১২৭.৬ থেকে আরেকটি দাবী নিয়ে এসেছে-“এরপর ৬ নম্বর মন্ত্রে রেভ ঋষিকে জ্ঞানময় স্তোত্র (প্রভুর প্রশংসাগীতি) ধারণ করিয়া মানুষের মধ্যে তীরন্দাজের ন্যায় সুনিপূণ ভাবে প্রচার করিতে আদেশ করা হইয়াছে। অপরদিকে, হযরত মোহাম্মদের উপর অবতীর্ণ কোরআনকে ‘হাকিম’ জ্ঞানময় গ্রন্হ বলা হইয়াছে । আর আশ্চর্য বিষয় যে, কোরআনের প্রথম সূরাটিও প্রভূর প্রশংসা দ্বারা আরম্ভহইয়াছেঃ”সমস্ত সৃষ্টি জগতের সৃষ্টিকর্তা প্রভূ আল্লাহর সকল প্রশংসা, যিনি অনন্ত করূণাময় পরম দয়ালু ।(সূরা-ফাতিহা)”(১) এবার কাটমোল্লা আরেক বৈদিক ঋষির আবিস্কার করলো “রেভ ঋষি”!(২) মোল্লা লেখা দেখে মনে হচ্ছে, মোল্লা নোটের মাধ্যমে সাধারণদের আইওয়াশ করতে নেমেছে। এক একবার এক একজনের অনুবাদ নিয়ে টানাটানি করছে, মূলত ওর কু-বুদ্ধি আর জাকিরের মন্তব্যের সাথে যারই অনুবাদের মিল পাচ্ছে তাকেই সেখান থেকে তুলছে, কোনো একটি স্থানে স্থির থাকছে না। This is called confusing effect.(৩) আগের মন্ত্রে মানে ৪নং মন্ত্রে “রেভ” মানে বুঝিয়েছিলো স্ত্রী-পুরুষ কে মানে মা-বাবা কে। যদিও এখানে রেভ মানে স্তুতা বা বিদ্বান বা প্রশংসক হিসাবে ব্যাবহার হতে পারে কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এটাই সেটা কাকে উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছে। এখানে রেভ হলসেই যে রাজ্য এবং ধন প্রাপ্তির জন্য সৎউপদেশ দেয়। আর বৈদিক যুগে রাজসভা তেএই ধরণের ব্যাক্তি উপস্থিত থাকতো। এই যেমন হস্তিনাপুরের রাজসভাতে বিদূর ও ব্যাসের রেভ হিসাবে অবস্থান, রেভ এর এই সমস্থ কর্মের জন্যই তো রেভ প্রশংসক।(৪) সবচেয়ে বড় ব্যাপার এখানে কোনো জ্ঞানময় গ্রন্থের অবতীর্ণের কথাই উল্লেখ নাই এখানে বল হয়েছে মনুষ্য বিদ্বানদের মধ্যে বসে আলোচনা করে একটি কার্যকারী সিদ্ধান্তে উপনিত হওয়া, মোল্লাদের দাবী যদি আমরা মানি তবে এটাও প্রমাণিত হচ্ছে কোরাণ আল্লার বাণী নয়!অথর্ববেদ ২০.১২৭.৭ এর সমাধানমন্ত্ররাজ্ঞো বিশ্বজনীনস্য যো দেবোৎমর্ত্যাঁ অতি।বৈশ্বানরস্য সুষ্টুতিমা সুনোতা পরিক্ষিতঃ।।ভাষার্থ(যঃ) যে (দেবঃ)বিজয়ের ইচ্ছিত পুরুষ {দেব} (মর্ত্যাণ অতি)মনুষ্যের উচ্চ গুণাবলী যুক্ত গুণী (বিশ্বজনীনস্য)সমস্থ লোকের হিতকারী (বৈশ্বানরস্য)সবার প্রতিনিধি (পরিক্ষিতঃ)সব প্রকার ঐশ্বর্যের অধিকারী (রাজ্ঞঃ)ঐ রাজা কে (সুষ্টুতিম)উত্তম স্তুতি{রাজার উত্তমগুণবলী} কে (আ)ভালো করে (সুনোত)প্রস্ফুটিত করো {সুন ধাতু থেকেউৎপত্তি}।ভাবার্থসর্বহিতকারী পুরুষ, সে সব মনুষ্যের উত্তম গুণ কে গ্রহণ করে।মুসলমানদের অপপ্রচারে জবাব-এবার কাটমোল্লা অথর্ববেদের ২০.১২৭.৭ থেকে আরেকটি দাবী নিয়ে এসেছে-“এরপর ৭ নাম্বার মন্ত্রে তাকে বলা হয়েছে যে, তিনি হবেন মানুষের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ট।আর মুসলিম পন্ডিত তো বটেই, অমুসলিম পন্ডিতরাও হযরত মুহাম্মদ সঃ কে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মানব বলে স্বীকার করে নিয়েছেন। মাইকেল এইচ হার্ট তার ১০০ মনিষির জীবনী গ্রন্থে, মুহাম্মদ সঃ কেসবার প্রথমে রেখেছেন।(১) একই ভাবে অমুসলিম পন্ডিত ও লেখক তো বটেই মুসলিম পন্ডিতরাও মুহাম্মদ কে সর্বকালের সর্বনিম্ন মানব বলেছে, উনাদের বই বা লিখা গুলো পড়লে তা বুঝা যায়। শুধু মুহাম্মদ কেনো উনাদের অনেকেই এটাও মানে ইসলাম সন্ত্রাসের ধর্ম। আজকাল তো বাজারে মুহাম্মাদ কার্টুন কিনতে পাওয়া যায়।(২) অথর্ববেদের ২০.১২৭.৭ এখানে স্পস্ট করে বলা হয়েছে, সেই বিশ্বজনীন সর্বশ্রেষ্ট রাজার উপকারী গুণ গুলোকেনিজের মধ্যে প্রস্ফুটিত করার উপদেশ। গোটা সুক্তটার বিষয় যখন “রাজধর্মের উপদেশ” ও গোটা সুক্তটাই যখন বৈদিক যুগের রাজধর্মের প্রেক্ষাপট কে তুলে ধরছে তখন সেখানে আমি মরুদস্যু মুহাম্মদ কে খুঁজতে যাবো কেনো!(৩) এই গোটা সুক্তে কাকে রাজা হিসাবে উল্লেখ করা হচ্ছে, তা ১১নং এবং ১৩নং মন্ত্রে এসে পরিস্কার হয়ে যায়। সেই হচ্ছে “ইন্দ্র”, যে এই সুক্তের দেবতা, যে এখানে রাজার ভূমিকাই আছে, যাকে কেন্দ্র করে মন্ত্র গুলো কে স্তুতি করা হচ্ছে।অথর্ববেদের ২০.১২৭.১২ এর সমাধানকাটমোল্লারা কুন্তাপ সুক্তের আগের মন্ত্র গুলো নিয়ে মন্তব্য করলেও, ঠিক এই ১২নং মন্ত্রে এসে থেমে যায়। এই মন্ত্রে একটি বিশেষ কর্মের কথা বলা আছে যার সাথে ইসলাম সম্পর্ক আরো অস্পস্টতা প্রকাশ পাই। আসুন এবার দেখে নিয় কি সেই কর্মমন্ত্রইহ গাবঃ প্রজাযধ্বমিহাশ্বা ইহ পূরুষাঃ।ইহো সহস্ত্রদক্ষিণোৎপি পূষা নি ষীদতি।।ভাষার্থ(গাবঃ) হে গো-সমূহ! তুমি (ইহ)সেখানে {সেই গৃহে} (অশ্বাঃ)হে অশ্ব! তুমি (ইহ)সেখানে (পুরুষাঃ)হে পুরুষ! তুমি (ইহ)সেখানে (প্রজাযধ্বম)বৃদ্ধি প্রাপ্ত হও। (ইহো)যেখানে (সহস্ত্রদক্ষিণঃ)সহস্র দক্ষিণাদাতা (পূষা)পালক [গৃহপতি] (অপি)সুদ্ধ (নি ষীদতি)অবস্থান করে।ভাবার্থউত্তম রাজার ব্যাবস্থা দ্বারা গৃহস্থমানুষ, গো-সমূহ, ঘোড়া ও প্রজাদের{মনুষ্যো} বৃদ্ধি করিয়ে পরস্পরের উপকারে লাগাবে।পর্যবেক্ষণ(১) এই মন্ত্র ও আগের মন্ত্র গুলো থেকে এটাই প্রমাণিত হচ্ছে। এখানে রাজা হবে খুব ধনবান নইলে এতো দান দেওয়া খুব অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু সেই তুলনাই মুহাম্মাদ তো গরীব ছিলো, অতো ধন সম্পদ তো মুহাম্মাদের কাছে ছিলো না! তবে কাটমোল্লারা কি ভেবে দাবী তোলে এই মন্ত্র গুলোতে মুহাম্মাদের উল্লেখ আছে?(২) এই মন্ত্রে স্পস্ট ভাবে বলা হয়েছে রাজা এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে যাতে গো-সমূহদের বৃদ্ধি ঘটবে, অর্থ্যাৎ গো-সমূহদের রক্ষার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু মুহাম্মাদ ও তাদের অনুসারীরা কেনো গো-ভক্ষক?ঋগ্বেদ ১.১০৫.৪ এর সমাধানমন্ত্রযজ্ঞ পৃচ্ছাম্যবম স তদুদুতো বি বোচতি।ক্ব ঋত পূর্ব্য গত কস্তদ্বিভর্তি নুতনো বিত্ত মে অস্য রোদসী।।পদ গঠনযজ্ঞম। পৃচ্ছামি। অবমম। সঃ। তত। দূতঃ। বিবোচতি। ক্ব। ঋতম। পুর্ব্যম। গতম। কঃ। তত। বিভর্তি। নুতনঃ। বিত্তম । মে। অস্য। রোদসী ইতি।ভাষার্থহে বিদ্বান! আমি {ঈশ্বর} আপনার প্রতি যে (অবমম)রক্ষক উত্তম বা নিকৃষ্ট (যজ্ঞম)সমস্থ বিদ্যা দ্বারা পরিপূর্ণ (পুর্ব্যম)পূর্বপুরুষরা যা সিদ্ধ করেছিলো (ঋতম)সত্যমার্গ বা উত্তম জনস্থানে (ক্ব)বলেছিলো এবং (গতম)বর্ণনা করেছিলো।(কঃ) আর কে (নুতনঃ)সেই নবীন জন (তত)যে ইহা কে (বিভর্তি)ধারণ করে? একেই (পৃচ্ছামি)জিজ্ঞাসা করি!(সঃ)ঘুমন্ত এই, (দূতঃ)এইদিক ঐদিক থেকে কথাবার্তা বা পদের অর্থ কে জেনে আপনি,(তত)এই সব বিষয় কে (বিবোচতি)বিচার বোধের শক্তি বলো? (অস্য)এই পূর্বোক্ত বিষয় কে তুমি (ইতি)এবং (মে)আমার বাক্য যারা বুঝতে পারে, তাদের উত্তেজন {দীপ্তিময় জ্ঞান} থেকে যে (রোদসী)সূর্যকিরণ, ভূমির ন্যায় তুল্য রাজা এবং প্রজা জনসমূহদের (বিত্তম)জানাও।ভাবার্থবিদ্যা কে অর্জনের ইচ্ছা রেখে, ব্রহ্মচারীদের{ব্রহ্মচর্য পালনকারী}উচিত হবে বিদ্বানদের কাছে গিয়ে অনেক প্রকার প্রশ্ন করে তার কাছে থেকে উত্তর লাভ করে নিজের বিদ্যা কে বৃদ্ধিকরা এবং হে বিদ্যাদাতা বিদ্বান! তোমরাহচ্ছো ভালো অবলম্বন, তোমরা যে ভাবে আছো সেইভাবে এসো এবং আমার {ঈশ্বরের} কাছে থেকে সংসারের জ্ঞান {পদের অর্থ} অর্থ্যাৎ বিদ্যা কে সমস্থ দিক দিয়ে জানো এবং সাধারণদের শিক্ষিত করে সত্য এবং অসত্য কে যথার্থ ভাবে বোঝাও।মুসলমানদের অপপ্রচারে জবাব-এবার কাটমোল্লা ঋগ্বেদের ১.১০৫.৪ থেকেআরেকটি দাবী নিয়ে এসেছে- “এখানে বলা হয়েছে সর্বশেষ যজ্ঞ বা ঐশ্বরিক কর্মের কথা, যখন ঈশ্বরের বানী ভূলন্ঠিত হবে এবং সেই ঈশ্বরের বানীকে নবায়ন করবে একজন দুত এসে। ইংরেজীতে বলতে পারি That Prophet । হিন্দুরা বেদকে যে স্বার্বজনীন মনে করে তা কিন্তু এই মন্ত্র দ্বারাই রিফিউট হয়ে যায়।কারন এই মন্ত্র অনুসারে বেদের জ্ঞানও লুপ্ত হবে ও তা নবায়ন হবে এজন দূত বা বার্তাবাহক এসে , যার বিবেচন হবে সর্বশেষ যজ্ঞ বা ঐশ্বরিক কর্ম। এই একটি মন্ত্রই পুরোপুরিভাবে ইসলামের কনসেপ্ট ও শেষ রাসুল সাঃ এর আসার ভবিষ্যদ্বানী করছে এ ব্যাপারে কি কারো সন্দেহ আছে ?(১) বেশ ঠিক আছে মানলাম! প্রথমত আমি দূতমানে That Prophet ধরবো না  কারণ নবীবাদ সনাতন ধর্মে নাই। দ্বিতীয়ত যদি এখানে বেদের নবায়ন এর কথা বলা হয় তাহলে এটাও স্পস্ট করতে হবে মুহাম্মাদ কোন বেদের কোন অংশে কে পুনঃনবীকরণ করেছে বা কোন বেদের উপর কাজ করেছে?  আর একটা জিনিস বুঝছি না সনাতন ধর্মে কি ঈশ্বরের দূতের অভাব পড়েছে যে আব্রাহামিক ধর্ম গুলো থেকে দূত কে ধার করতে যাবে, না ১৪০০ বছর ধরে সনাতন ধর্মে কোনো দূত আসেনি, গীতাই শ্রী কৃষ্ণ তো বলে গেছেন ধর্মরক্ষার জন্য তিনি যুগ যুগ ধরে আবির্ভূত হবেন! ঋগ্বেদের ১.১০৫.৪ এর মূলমন্ত্র, মন্ত্রের পদগঠন, ভাষার্থ ও সবচেয়ে দামী মন্ত্রের সঠিক উদ্দেশ্য ও সরল অর্থ যা এই মন্ত্রের মূল জ্ঞান সেই ভাবার্থ কে শুদ্ধ আলোচনা করেছি। মজার বিষয় কাটমোল্লা যে মন্ত্রকে দিয়ে তার অপপ্রচার লিখা শুরু করেছিলো সেই মন্ত্রটি সাধারণ হিন্দুদের জন্য একটিউপদেশ দিয়ে দিলো!কাটমোল্লার শেষ মন্তব্য- একিভাবে মরুভুমিতে বসবাসকারী এই অন্তিম ঋষি, মামহ ঋষি, নারাশাংসার বা সর্বশ্রেষ্ট মানবের বর্ননা রয়েছে ঋগবেদ ১/১৩/৩, ১/১৮/৯, ১/১০৬/৪, ১/১৪২/৩, ২/৩/২, ৩/২৯/১১, ৫/৫/২, ৭/২/২, ১০/৬৪/৩ সহ আরো বিভিন্ন জায়গায় যা সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সঃ এর আলেখ্য।•বেদ সম্বন্ধে এইসব মূর্খ মোল্লারা বেদে “ব” টাও না জেনে এসেছে বেদ নিয়ে অপপ্রচার করতে। বস্তুত এইসব কোনো মন্ত্রেও মুহাম্মাদের কোনো উল্লেখ নাই। এইসব মন্ত্রে উক্ত নামগুলো স্তুতি করা হচ্ছে সেই সুক্তের দেবতা কে বা কোনো একটি নির্দিষ্ট চরিত্র কে, এই যেমন এই মন্ত্রসমূহে নরাশংস শব্দটি আছে যা কোনো মন্ত্রে রাজা, কোথাও ঈশ্বর, কোথাও যজ্ঞ অর্থে ব্যাবহৃত হয়েছে, কোনো মুহাম্মাদ কে উদ্দেশ্য করে নয়।যদি বেদে মুহাম্মাদ থাকতো তবে অনেক আগে ভারতের সবচেয়ে বড় বৈদিক সংস্থা আর্য সমাজ তার মান্যতা দিয়ে দিতো! এগুলোসব এইসব কাটমোল্লাদের কাটা বুদ্ধির প্রয়াস মাত্র। এইসব কাটমোল্লারা যখনই কোনো এই টাইপের নোট লিখবে আপনিও উল্লেখ করে দেবেন “আমিও আপনার নোটের প্রতিটি বিষয় মেনে নেবো যদি এটা আর্য সমাজীদের দ্বারা পরীক্ষিত প্রমাণিত হয়”। কাটমোল্লারাওপারে বেদের এইসব বিষয় গুলো নিয়ে প্রিন্ট বের করে (প্রমাণ স্বরূপ) সঙ্গে একটি চিঠি লিখে তা সরাসরি আর্য সমাজের মেন অফিসে পাঠিয়ে দিতে, মোল্লাও নিজেও দেখে নেবে উনারা কি উত্তর লিখে পাঠাই বা সরাসরি আর্য সমাজের অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে পারে। মোল্লা এইদিকে কিন্তু হাঁটবে না কারণ মোল্লা ভালো জানে হাটে হাঁড়ি ভেঙে যেতে পারে।নরম পেয়ে গরম দেখানো যায় কিন্তু গরমের উপর গরম দেখানো যায় না।•এইসব কাটমোল্লারা জানে বেদ সম্বন্ধেঅধিকাংশ হিন্দু পরিচিত নয় এবং বাংলা ভাষাতে শুদ্ধ বেদের অনুবাদ এখনো কেউ লিখে নাই যার দরুণ ওরা বেদ নিয়ে এইসব অপপ্রচার করার সুযোগ পেয়ে যায়!Writer & Editor - Samir Kumar Mondal(বৈদিক আর্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর হিন্দি ঋগ্বেদবেদভাষ্য থেকে শুদ্ধ বাংলাতে সরাসরি অনুবাদিত)(ভারতীয় আর্য সমাজের অফিশিয়াল পেজের হিন্দি অথর্ববেদভাষ্য থেকে শুদ্ধ বাংলাতে সরাসরি অনুবাদিত)কোনো স্থানে যদি বানান ভুল হয় তবে ক্ষমা করবেন, এটা স্পিডে টাইপিং এর সময়ে হয়ে যায়।at12:44 PM

৩টি মন্তব্য:

  1. বই দুইটা পড়তে পারেন
    https://drive.google.com/file/d/10t3bN1mbtHubd5J8U8u6tk4nWKe23BYL/view?usp=drivesdk


    https://drive.google.com/file/d/157rLBoc2EG0jMslu_P_hs4AarOgK3sHJ/view?usp=drivesdk

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. ভবিষ্যপুরাণে নবী মুহাম্মদ সম্পর্কে আসলে যা বলা হয়েছে, মুসলমানদের মিথ্যার জবাব
      https://youtu.be/7JXtH2ySWwg

      মুছুন