রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

মহাভারত

মহাভারতপ্রাচীন ভারতের দু'টি সংস্কৃত মহাকাব্যের মধ্যে অন্যতমকুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ; পুঁথিচিত্রকুরুক্ষেত্রেকৃষ্ণওঅর্জুন; অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতাব্দীর চিত্রকলামহাভারত(সংস্কৃত: महाभारतम्)সংস্কৃত ভাষায়রচিতপ্রাচীন ভারতেরদুটি প্রধানমহাকাব্যেরঅন্যতম (অপরটি হলরামায়ণ)। এই মহাকাব্যটি হিন্দুশাস্ত্রেরইতিহাসঅংশের অন্তর্গত।মহাভারত-এর মূল উপজীব্য বিষয় হলকৌরবওপাণ্ডবদেরগৃহবিবাদ এবংকুরুক্ষেত্র যুদ্ধেরপূর্বাপর ঘটনাবলি। তবে এই আখ্যানভাগের বাইরেওদর্শনওভক্তিরঅধিকাংশউপাদানই এই মহাকাব্যে সংযোজিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়,ধর্ম,অর্থ,কামওমোক্ষ– এই চারপুরুষার্থ-সংক্রান্ত একটি আলোচনা (১২।১৬১) সংযোজিত হয়েছে এই গ্রন্থে।মহাভারত-এর অন্তর্গত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রচনা ও উপাখ্যানগুলি হলভগবদ্গীতা,দময়ন্তীরউপাখ্যান,রামায়ণ-এরএকটি সংক্ষিপ্ত পাঠান্তর ইত্যাদি; তবে এগুলিকেমহাভারত-রচয়িতার নিজস্ব সৃষ্টি বলে মনে করা হয়।প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী,মহাভারত-এর রচয়িতাব্যাসদেব। অনেক গবেষক এই মহাকাব্যের ঐতিহাসিক বিকাশ ও রচনাকালীন স্তরগুলি নিয়ে গবেষণা করেছেন। অধুনা প্রাপ্ত পাঠটির প্রাচীনতম অংশটি মোটামুটি ৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ রচিত হয়।[১]মহাভারতের মূলপাঠটি তার বর্তমান রূপটি পরিগ্রহ করেগুপ্তযুগেরপ্রথমাংশে (খ্রিষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দী)।[২]মহাভারতকথাটির অর্থ হলভরতবংশের মহান উপাখ্যান। গ্রন্থেই উল্লিখিত হয়েছে যেভারতনামে ২৪,০০০ শ্লোকবিশিষ্ট একটি ক্ষুদ্রতর আখ্যান থেকেমহাভারতমহাকাব্যের কাহিনিটি বিস্তার লাভ করে।[৩]মহাভারত-এ এক লক্ষ শ্লোক ও দীর্ঘ গদ্যাংশ রয়েছে। এই মহাকাব্যের শব্দসংখ্যা প্রায় আঠারো লক্ষ।মহাভারতমহাকাব্যটির আয়তনইলিয়াডওওডিসিকাব্যদ্বয়ের সম্মিলিত আয়তনের দশগুণ এবংরামায়ণ-এর চারগুণ।[৪][৫]গঠন ও প্রসঙ্গগ্রন্থ রচনাব্যাসদেবেরকাহিনীটিকেগণেশলিখিত রূপ দিচ্ছেনমহাভারতে বর্ণিত হয়েছে, মহর্ষিবেদব্যাসহিমালয়েরএক পবিত্র গুহায়তপস্যাকরবার পর মহাভারতের সম্পূর্ণ ঘটনাটি স্মরণ করেন এবং মনে মনেই এর রচনা করেন।[৬]ব্যাসদেব চাইলেন এই মহান কাহিনি সিদ্ধিদাতা গণেশের দ্বারা লিপিবদ্ধ হোক। গণেশ লিখতে সম্মত হলেন, কিন্তু তিনি শর্ত করলেন যে, তিনি একবার লেখা শুরু করলে তার শেষ না হওয়া পর্যন্তব্যাসদেবেরআবৃত্তিএকটিবারও থামতে পারবে না। তখন ব্যাসদেব বুদ্ধিমতো পাল্টা একটি শর্ত উপস্থাপনা করলেন – "গণেশ যে শ্লোকটি লিখবেন, তার মর্মার্থ না বুঝে লিখতে পারবেন না"। ভগবান গণেশ এই প্রস্তাব স্বীকার করলেন।এইভাবে ব্যাসদেব মাঝে মাঝে কিছু কঠিন শ্লোক রচনা করে ফেলতেন, যার ফলেগণেশকে শ্লোকটির অর্থ বুঝতে সময় লাগত এবং সেই অবসরে ব্যাসদেব তাঁর পরবর্তী নতুন শ্লোকগুলি ভেবেনিতে পারতেন। এইরূপে সম্পূর্ণ মহাভারত রচনাকরতে প্রায় ৩ বৎসর লেগে যায়।[৭][৮]ব্যাসদেবপ্রথমে অধর্মের বিরুদ্ধে ধর্মের জয় সূচক উপাখ্যান যুক্ত ১০০০০০ শ্লোক সমন্বিত আদ্য জয় গ্রন্থ রচনা করেন। সর্বশেষে তিনি ষাট লক্ষ শ্লোক সমন্বিত অপর একটি গ্রন্থ রচনা করেন, যে গ্রন্থের ৩০ লক্ষ শ্লোক দেবলোকে, ১৫ লক্ষ শ্লোক পিতৃলোকে, ১৪ লক্ষ রক্ষোযক্ষ লোকে স্থান পেয়েছে এবং অবশিষ্ট মাত্র ১ লক্ষ শ্লোক এই মনুষ্যলোকে ‘মহাভারত’ নামে সমাদৃত হয়েছে। এই সম্বন্ধে মহাভারতেই বর্ণিত হয়েছে :“ত্রিংশচ্ছতসহস্রঞ্চ দেবলোকে প্রতিষ্ঠিতম্॥পিত্রে পঞ্চদশ প্রোক্তং রক্ষোযক্ষে চতুর্দ্দশ।একং শতসহস্রন্তু মানুষেষু প্রতিষ্ঠিতম্॥”গ্রন্থ প্রচারমহারাজজন্মেজয়েরসর্পযজ্ঞমহাভারত রচনা সম্পূর্ণ হলে ব্যাসদেব এই কাব্য তাঁর পুত্রশুকদেবকে দিয়ে অধ্যয়ন করান, পরে শিষ্য পরম্পরায় গ্রন্থটিবৈশম্পায়ন, পৈল,জৈমিনি, অসিত-দেবল প্রভৃতি ঋষি দ্বারা পঠিত হয়। শুকদেব এই গ্রন্থটির কাহিনি গন্ধর্ব, যক্ষ ওরাক্ষসদের মধ্যে, দেবর্ষিনারদদেবতাদের মধ্যে ও অসিত-দেবল পিতৃদের মধ্যে প্রচারিত করেন।[৯]বৈশম্পায়ন এই কাহিনিটি প্রথম মনুষ্যদের মধ্যে 'ভারত' নামে প্রচার করেন।অর্জুনেরপ্রপৌত্র মহারাজজন্মেজয়ের মহাযজ্ঞে ঋষি বৈশম্পায়ন ওই কাহিনি জন্মেজয় সহ সৌতি এবং উপস্থিত মুনি-ঋষিদের শোনান।[৯]একদা সম্রাটপরীক্ষিৎতক্ষক নাগের দংশনে মারা গেলে ক্রোধের বশে পরীক্ষিৎপুত্রজনমেজয়বিশ্বের সমস্ত সাপেদের ধ্বংস করবারপণ নিয়ে সর্পযজ্ঞের আয়োজন করেন। কিন্তু তক্ষকের অনুরোধে আস্তিক মুনি এই যজ্ঞ পণ্ড করে দেন। জনমেজয়ের অনুতাপ হয় ও পাপ খণ্ডন করতেঅশ্বমেধ যজ্ঞেরআয়োজন করেন। কিন্তু, কলিযুগে অশ্বমেধ যজ্ঞ করা অনর্থের কারণ মনে করেদেবরাজ ইন্দ্রছল করে এই যজ্ঞও নষ্ট করেন ও জনমেজয়ের ওপর ব্রহ্মহত্যার পাপ পড়ে। এই মহাপাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে তিনিব্যাসদেবেরপরামর্শ মতো ঋষি বৈশম্পায়নের কাছ থেকে পবিত্র মহাভারতের কাহিনি শ্রবণ করে পাপমুক্ত হন। পরে ঐ যজ্ঞে উপস্থিত গল্পকথকউগ্রশ্রবা সৌতিকাহিনিটি শুনে তা নৈমিষারণ্যে যজ্ঞরত শৌনক ও অন্যান্য মুনিদের শোনান। এইরূপে মনুষ্যসমাজে মহাভারতের কাহিনি প্রচারিত হয়।[১০]বিশালতামহাভারতের বিশালতা তথা দার্শনিক গূঢ়তা কেবলভারতেরপৌরাণিক আখ্যানই নয়, বরং এটিকেসমগ্রহিন্দু ধর্মএবংবৈদিক দর্শনও সাহিত্যের সারসংক্ষেপ বলা যেতে পারে। 'মহাভারত' নামটির উৎপত্তি প্রসঙ্গে একটি আখ্যান প্রচলিত যে,দেবতারা তুলাযন্ত্রের একদিকে চারটিবেদরাখেন ও অন্যদিকে বৈশম্পায়ন প্রচারিত ভারত গ্রন্থটি রাখলে দেখা যায় ভারত গ্রন্থটির ভার চারটি বেদের চেয়েও অনেক বেশি। সেই কারণে ভারত গ্রন্থের বিশালতা দেখে দেবগণ ও ঋষিগণ এর নামকরণ করলেন'মহাভারত'। আবার একে 'পঞ্চম বেদ'ও বলা হয়। জগতের তাবৎ শ্রেষ্ঠ বস্তুর সঙ্গে একে তুলনা করে বলা হয়েছে: "মহত্ত্বাদ্ ভারতবত্ত্বাচ্চ মহাভারতমুচ্যতে।"[১১]বাংলাতেওমহাভারতের বিশালতা সম্পর্কিত একটি সুপ্রচলিত প্রবাদ রয়েছে:“যা নেই ভারতে, তা নেই ভারতে।”অর্থাৎ যে বস্তুটি মহাভারতের গল্পে পাওয়া যায় না, তাভারতবর্ষতথা পুরো সংসারে কোথাও পাওয়া যাবে না।অধ্যায় সমূহমহাভারত কাব্যগ্রন্থটিতে মোট ১৮টি অধ্যায় তথা ‘পর্ব’ ও ১০০টি ‘উপপর্ব’ রয়েছে।পর্বশীর্ষকউপপর্বশ্লোক সংখ্যাবিষয় সংক্ষেপ১আদিপর্ব১-১৯৭৯০০ঋষিবৈশম্পায়নরাজাজন্মেজয়ের প্রায়শ্চিত্ত যজ্ঞে তাঁকে এবং উপস্থিত ব্যক্তিদের মহাভারত কথা শোনান ও সেই কাহিনি শুনে লোমহর্ষণপুত্রসৌতিনৈমিষারণ্যে যজ্ঞরত শৌনক ও অন্যান্য মুনিদের ঐ কাহিনি শোনাতে শুরু করেন – ভৃগুবংশ পরিচয়, কুরুবংশ, মহারাজশান্তনুওভীষ্মের কথা,পাণ্ডবওকৌরবদের জন্ম, জতুগৃহদাহ,পাণ্ডব ওদ্রৌপদীর বিবাহ ওকৃষ্ণার্জুন কর্তৃক খাণ্ডববনদাহ২সভাপর্ব২০-২৮২৫১১ময়দানব কর্তৃকইন্দ্রপ্রস্থেপাণ্ডবদের প্রাসাদ নির্মাণ, রাজসূয় যজ্ঞেযুধিষ্ঠিরেরসম্রাট পদ লাভ ও কৌরবদের ঈর্ষা,শকুনিরকপটদ্যূতক্রীড়ায়পাণ্ডবদের রাজ্য ও সম্পদ হরণ,দুঃশাসনকর্তৃকদ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ ও পাণ্ডবদের ১২ বছর বনবাস ও ১ বছর অজ্ঞাতবাস নির্ধারণ৩বনপর্ব২৯-৫০১১৬৬৪১২ বৎসরব্যাপী বনবাসে পাণ্ডবদের জীবনযাপন ও বিচিত্রকাহিনি শ্রবণ,অর্জুনেরবিবিধ দৈবঅস্ত্র লাভ,কৃষ্ণকর্তৃকদূর্বাসার দর্পচূর্ণ, জয়দ্রথের দ্রৌপদী হরণ৪বিরাটপর্ব৫১-৫৫২০৫০মৎস্যদেশে রাজা বিরাটের কাছে ছদ্মবেশে পঞ্চপাণ্ডব ও দ্রৌপদীর আশ্রয়, যুদ্ধে কৌবরদের পরাজয়, উত্তরা-অভিমন্যুর বিবাহ৫উদ্যোগপর্ব৫৬-৬৫৬৬৯৮পাণ্ডবওকৌরবপক্ষে মহাযুদ্ধের প্রস্তুতি, যাদব সাহায্য প্রার্থনায়অর্জুনওদুর্যোধনেরদ্বারকায়গমন, অর্জুনের কৃষ্ণ প্রাপ্তি, পাণ্ডবদেরশান্তিদূত রূপে শ্রীকৃষ্ণের হস্তিনাপুরে গমন ও বিভূতি প্রদর্শন৬ভীষ্মপর্ব৬৬-৬৯৫৮৮৪যুদ্ধারম্ভ, রণক্ষেত্র দর্শনে অর্জুনের বিষাদ, শ্রীকৃষ্ণেরযোগধর্মকথন ও বিশ্বরূপ প্রদর্শন,ভীষ্মের পরাক্রমে কৃষ্ণের ক্ষোভ ও অস্ত্রনিক্ষেপ, অর্জুন কর্তৃক ভীষ্মদমন ও শরশয্যা নির্মাণ৭দ্রোণপর্ব৭০-৭৭৮৯০৯দ্রোণকে সেনাপতিত্বে বরণ,সপ্তরথী কর্তৃকঅভিমন্যুবধ, জয়দ্রথ বধ,যুধিষ্ঠিরের মিথ্যা বাক্যের ছলনায়ধৃষ্টদ্যুম্নকর্তৃক দ্রোণবধ৮কর্ণপর্ব৭৮৪৯৬৪কর্ণকে সেনাপতিত্বে বরণ,ভীমকর্তৃকদুঃশাসনবধ, মেদিনীতে কর্ণের রথচক্রের পতন ও সেই সুযোগে অর্জুন কর্তৃক কর্ণবধ৯শল্যপর্ব৭৯-৮০৩২২০যুদ্ধের অন্তিম দিন,শল্যবধ,সহদেবকর্তৃক শকুনিবধ, ভীম কর্তৃকদুর্যোধনের ঊরুভঙ্গ ও দুর্যোধনের মৃত্যু১০সৌপ্তিকপর্ব৮১৮৭০রাতে গোপনেঅশ্বত্থামার পাণ্ডব শিবিরে প্রবেশ, ঘুমন্ত দ্রৌপদীর পঞ্চপুত্র, ধৃষ্টদ্যুম্নাদি হত্যা, অশ্বত্থামাও অর্জুনের যুদ্ধ, অশ্বত্থামার দিব্য শিরোমণি হরণ১১স্ত্রীপর্ব৮২-৮৪৭৭৪ধৃতরাষ্ট্রকর্তৃক লৌহভীম চূর্ণকরণ, স্বজনহারাদের বিলাপ ও মৃতদেহ সৎকার, কৃষ্ণের প্রতিগান্ধারীর শাপ১২শান্তিপর্ব৮৫-৮৭১৪৭৩২যুধিষ্ঠিরের রাজপদে অভিষেক, যুধিষ্ঠিরের প্রতিভীষ্মের হিতোপদেশ ও ধর্মব্যাখ্যা১৩অনুশাসনপর্ব৮৮-৮৯৮০০০ভীষ্মদেবের স্বর্গারোহণ ও যুধিষ্ঠিরের রাজ্যশাসন১৪অশ্বমেধপর্ব৯০-৯২৩৩২০যুধিষ্ঠিরের অশ্বমেধ যজ্ঞ, অর্জুনের দিগ্বিজয়ে যাত্রা,বভ্রুবাহনও অর্জুনের যুদ্ধ১৫আশ্রমবাসিকপর্ব৯৩-৯৫১৫০৬ধৃতরাষ্ট্র,গান্ধারী,কুন্তীওবিদুরেরবানপ্রস্থ গ্রহণ, বিদুরেরদেহত্যাগ, দাবানলে বাকিদের মৃত্যু১৬মৌষলপর্ব৯৬৩২০যদুবালকদের প্রতি মুনিদের অভিশাপ, প্রভাসে মৌষলযুদ্ধে যদুবংশধ্বংস,বলরামওকৃষ্ণেরমহাপ্রয়াণ,দ্বারকানগরীর পতন১৭মহাপ্রস্থানিকপর্ব৯৭১২৩পাণ্ডব ও দ্রৌপদীর মহাপ্রস্থানে গমন,দ্রৌপদী,ভীম,অর্জুন,নকুলওসহদেবেরপতন১৮স্বর্গারোহণপর্ব৯৮২০৩ধর্ম কর্তৃক যুধিষ্ঠিরকে পরীক্ষা, যুধিষ্ঠিরের নরকদর্শন, পঞ্চপাণ্ডব ও দ্রৌপদীর স্বর্গলাভপরিশিষ্টহরিবংশপর্ব৯৯-১০০১২০০০ভগবানশ্রীকৃষ্ণেরজীবনকথারচনাকালকর্ণাটকেরমুরুদেশ্বর মন্দিরে (ভারত) রূপায়িত ব্যাস ও গণেশের মহাভারত রচনামহর্ষিবেদব্যাসকথিত মহাভারতের কাহিনি রচনা করতে সম্ভবত ৩ বৎসর কাল অতিবাহিত হয়েছিল, এর দ্বারা অনুমান করা যেতে পারে, ঐ সময় লিখন পদ্ধতি তেমন আধুনিক ছিল না, সে কালে প্রচলিত নানা বৈদিক সাহিত্যগুলোকে মুনিঋষিরা গুরু-শিষ্যপরম্পরাঅনুসারে নিজেরা মৌখিক রূপে স্মরণ করে রাখতেন। সে সময়আর্যভাষাসংস্কৃতঋষিদের মান্য ভাষার মর্যাদা পেয়েছিল।[১২]এই রূপে সমগ্রবৈদিক সাহিত্যতথাকথিত গুরু-শিষ্য পরম্পরায় মৌখিক রূপে সংরক্ষিত থাকত। এরপর সময়ের সাথে সাথে বৈদিক যুগের পতন হয় এবং সেই প্রাচীন গুরু-শিষ্য পরম্পরায় স্মরণ করার রীতি লুপ্ত হয়, তখন সেই সমস্ত সাহিত্যগুলিকে লিখিত রূপে সংরক্ষণের রীতি প্রচলিত হয়। এই সময়ব্রাহ্মী লিপিরমাধ্যমে লেখার প্রচলন ঘটে। বর্তমান পণ্ডিতগণের ধারণা যে, মহাভারত প্রাচীন অবস্থা থেকে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছানো কয়েকটি ধাপের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়। গবেষকদের মতে, মহাভারতের রচনাকাল ৩টি প্রারম্ভিক স্তরে বিভক্ত।[১৩]এই ৩ স্তরের সময়কাল নিম্নরূপ :*.৩১০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ[১৪]ক. সর্বপ্রথমেব্যাসদেব১০০ পর্ব ও এক লাখ শ্লোক সমন্বিত 'জয়' গ্রন্থ রচনা করেন, যা পরবর্তী কালে মহাভারত নামে প্রসিদ্ধ হয়।খ. পরে ব্যাস প্রচারিত ঐ কাহিনিটিকে তাঁর শিষ্য বৈশম্পায়নজনমেজয়েরমহা যজ্ঞে জনমেজয় সহসৌতিঅন্যান্য মুনিদের শোনান। এই সময় গ্রন্থটির নাম হয় 'ভারত'।*.২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ[১৪]তৃতীয় বার বৈশম্পায়ন কথিত ভারত কাহিনিটিকেসৌতি১৮টি খণ্ডে বিভক্ত করেন ও নৈমিষারণ্যে স্থিতশৌনকও অন্যান্য মুনিদেরগল্পের আকারে শোনান। সৌতির এই গল্পটিই 'মহাভারত' নামে সমগ্র বিশ্বে প্রচারিত হয়।[১৫]*.১২০০-৬০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ[১৪]পরে লিখন পদ্ধতির উন্নতি হলে সৌতি প্রচারিত এই প্রসিদ্ধ মহাভারতের কাহিনিপাণ্ডুলিপিবা পুঁথিতেব্রাহ্মীকিংবাসংস্কৃতেলিখিত হয়। এর পরও নানা মুনি ও পণ্ডিতরা নিজস্ব শৈলীতে মহাভারতের মূল কাহিনির সাথে আরও অনেক সমসাময়িক কাহিনির সংযোজন করেন।বাংলাদেশেরকান্তনগর মন্দিরেখোদিতটেরাকোটায়মহাভারতের দৃশ্য, ১৮ শতকে জমিদার প্রাণনাথ রায় কর্তৃক নির্মিত।ঐতিহাসিক প্রমাণ*.১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দমহাভারতেগুপ্তকিংবামৌর্যসাম্রাজ্য (১০০০-৭০০ খ্রি.পূ.) অথবাজৈনবাবৌদ্ধধর্মের (৭০০-২০০ খ্রি.পূ.) কোনো উল্লেখ নেই। তাছাড়া শতপথ ব্রাহ্মণ[১৬](১১০০ খ্রি.পূ.) ও ছান্দোগ্যউপনিষদে(১০০০ খ্রি.পূ.) মহাভারতের কিছু প্রসঙ্গ পাওয়া যায়। অর্থাৎ মহাভারত ১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের অনেক আগেই লেখা হয়েছিল।[১৭]*.৬০০-৪০০খ্রিষ্টপূর্বাব্দপাণিনিরচিতঅষ্টাধ্যায়ীতে(৬০০-৪০০ খ্রি.পূ.) মহাভারতের কাহিনি ও কৃষ্ণার্জুনেরকিছু প্রসঙ্গ রয়েছে। অতএব মহাভারত যে পাণিনির যুগের অনেক আগে থেকেই প্রচলিত ছিল, তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।[১৩][১৭]*.১ম শতাব্দীপ্রথম শতাব্দীতেইউনানেররাজদূত ডিও ক্রাইজ়োস্টমের (Dio Chrysostom) বর্ণনায় জানা যায়, তৎকালীনদক্ষিণ এশীয়লোকেদের কাছে এক লক্ষ শ্লোক যুক্ত একটি মহাগ্রন্থ ছিল, অর্থাৎ সেই সময়ও মহাভারতে এক লক্ষ শ্লোকই ছিল।[১৫]সংস্কৃতেরসর্বাপেক্ষা প্রাচীন একটিপাণ্ডুলিপিতে(১ম শতাব্দী) মহাভারতের ১৮টি পর্বের একটি অনুক্রমণিকা পাওয়া গিয়েছে, অর্থাৎ সেই কালে ১৮ পর্ব যুক্ত মহাভারতের কাহিনিই প্রচলিত ছিল, যদিও ব্যাসদেব ১০০টি পর্ব যুক্ত আদি মহাভারত রচনা করেন, যা পরে ১৮টি পর্বে বিবর্তিত হয়।পুরাতাত্ত্বিক প্রমাণমহাভারতকালীনভারতবর্ষেরমানচিত্র ও রাজ্যসমূহ*.সরস্বতী নদীমহাভারতে বৈদিক যুগের পশ্চিমবাহিনী সরস্বতী নদীর বর্ণনা বহু জায়গায় করা হয়েছে, যথা – সরস্বতী নদীর তীর বরাবরপ্লক্ষবৃক্ষ (প্লক্ষ প্রস্রবণ,যমুনোত্রীর নিকট) থেকে প্রভাস তীর্থ (কচ্ছের রণ অঞ্চল,গুজরাত) পর্যন্তবলরামেরতীর্থযাত্রার কথাওমহাভারতে রয়েছে।[১৮]কিছু ভূবিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, বর্তমানের শুষ্ক ঘগ্গর-হাকরা নদীই বাস্তবে বৈদিক যুগের সরস্বতী নদী, যেটি ৫০০০-৩০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে পশ্চিম ভারতে বইত এবং আনুমানিক ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ভূ-আলোড়ন জনিত কারণে শুকিয়ে যায়। বৈদিক যুগে লিখিতঋগ্বেদেসরস্বতী নদীকে ‘নদীতমা’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। অর্থাৎ ঋগ্বৈদিকসভ্যতায় সরস্বতী নদীই ছিল সর্বপ্রধান নদী,গঙ্গানয়।ভূ-আলোড়নে সরস্বতী নদীর মূল প্রবাহ যমুনার সাথে মিশে যায়, যেমন ‘ত্রিবেণী সংগম’কেগঙ্গা,যমুনাও সরস্বতীর সঙ্গমস্থল বলা হয়।[১৯]পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে ওপুরাণেএও বলাহয়েছে, পরীক্ষিতের ২৮ প্রজন্মের রাজত্বের সময় গঙ্গার বিধ্বংসী বন্যায়হস্তিনাপুরনগরী ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং পরবর্তী রাজারা কৌশাম্বী নগরে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন।মহাভারতে বর্ণিত হয়েছে, সরস্বতী নদী বিনাশ্ন নামক তীর্থে শুকিয়ে যায়। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ম্লেচ্ছদের সাথে বিদ্বেষের কারণে সরস্বতী নদী ম্লেচ্ছ প্রদেশে যাত্রা বন্ধ করে দেন।*.দ্বারকাভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগগুজরাতেরপশ্চিম উপকূলে সমুদ্রের গভীরে  প্রায় ৩৫০০-৪০০০ বছর পুরাতন একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরী আবিষ্কার করেছে। এই নগরীকে মহাভারতে বর্ণিত যাদবদেরদ্বারকা নগরীবলে অনুমান করা হয়েছে। প্রোফেসর এস. আর. রাও একেদ্বারকাবলেই চিহ্নিত করেছেন। যদিও এই ধারণার বিরুদ্ধে ইন্ধন জুগিয়েছে ঐ অঞ্চলের নিকটে প্রাপ্ত ৩৫০০ বছর পুরোনো অন্য একটি ডুবন্ত নগরী।এই সমস্ত তথ্য ও মহাভারতের জ্যোতিষীয় তিথি, ভাষা বিশ্লেষণ ও বিদেশী সূত্রের প্রমাণ নিরীখে এই সিদ্ধান্তে উপনীতহওয়া যায় যে, মূল মহাভারতে রচনা ৩০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ অথবা ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে হয়েছিল। যদিও আধুনিক সংস্করণ গুলি ৬০০-২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে তৈরি হয়েছিল।ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটমহাভারতের মূল বৃত্তান্ত হল চন্দ্রবংশীয় দুই পরিবারপাণ্ডবওকৌরবতথাধর্মও অধর্ম পক্ষের মধ্যে মহাসংঘর্ষ। পঞ্চপাণ্ডব ও শতকৌরবের মধ্যে ভূমির অধিকার সম্পর্কিত যে যুদ্ধ হয়, তাকুরুক্ষেত্রের যুদ্ধনামে পরিচিত। এই মহাযুদ্ধের সময়কাল সম্পর্কে বিভিন্ন ভারতীয় ও পশ্চিমী গবেষকদের মত বিভিন্ন। যথা –*.বিশ্বখ্যাত ভারতীয় গণিতজ্ঞ ও মহাকাশবিদবরাহমিহিরেরসিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাভারতের যুদ্ধ ২৪৪৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সংঘটিত হয়।[২০]*.বিশ্ববিখ্যাত ভারতীয় গণিতজ্ঞআর্যভট্টেরঅনুসারে এই যুদ্ধের তিথি হল ১৮ই ফেব্রুয়ারী, ৩১০২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।[২১]*.চালুক্যরাজবংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট২য় পুলকেশীরআইহোল প্রশস্তিতেউল্লিখিত হয়েছে, এই যুদ্ধের পর ৩৬৩৫ বর্ষ কেটে গেছে,সেই সাপেক্ষে এই যুদ্ধ ৩১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সংঘটিত হয়।*.পুরাণের বিভিন্ন রাজবংশের সাথেচন্দ্রগুপ্ত মৌর্যেরতুলনা করলে সময়কালটি দাঁড়ায় ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ, যদিও কিছু বিজ্ঞানীদের মতে যুদ্ধ হয়েছিল ৩১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, কারণ ইউনানের রাজদূতমেগাস্থিনিসেরলেখা ‘ইন্ডিকা’য় উল্লিখিত রাজা ‘চন্দ্রগুপ্ত’গুপ্ত বংশেরসম্রাটচন্দ্রগুপ্তও হতে পারে।*.পাশ্চাত্যের বিজ্ঞানী মাইকেল ভিট্‌জাল বলেছেন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ ১২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে হতে পারে, কারণ তিনি এই যুদ্ধ ভারতেরলৌহ যুগে(১২০০-৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) হওয়া যুদ্ধ বলে মনে করেন।*.অধিকাংশ ভারতীয় বিজ্ঞানী যেমন বি. এন. আচার, এন. এস. রাজারাম, কে. সদানন্দ প্রমুখরাগ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান গণনার মাধ্যমে জানিয়েছেন, এই যুদ্ধ হয় ৩০৬৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে; আবার কিছু ইওরোপীয় বিজ্ঞানী বলেছেন, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ ১৩ইনভেম্বর, ৩১৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।*.ভারতীয় বিজ্ঞানী পি. ভি. বারটক পূর্বের পরীক্ষার সাপেক্ষেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যুদ্ধ ১৬ই অক্টোবর, ৫৫৬১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে শুরু হয়েছিল। তাঁর বক্তব্য,মেগাস্থিনিসতাঁর ইন্ডিকা গ্রন্থে ভারত ভ্রমণের সময় জামুনা (যমুনা)নদীর ধারে মেথোরা (মথুরা) নগরের শূরসেনীয়দের কাছ থেকে উপহারের কথা লিখেছেন, মেগাস্থিনিস আরও বলেন,শূরসেনীয়রা ‘হেরাকল্‌স’ নামে এক দেবতার আরাধনা করত, যেই দেবতা অতি মহান ও চন্দ্রগুপ্তের ১৩৮ প্রজন্ম আগে বাস করতেন।হেরাকল্‌সের পুত্ররা পরস্পরের সাথে বিবাদে মারা যায়। স্পষ্টতই, এই হেরাকল্‌স হলেনশ্রীকৃষ্ণ, যাকে 'হরিকৃষ্ণ' (অর্থাৎ হেরাকল্‌স) নামেও অভিহিত করা হয়। আর যে সময়কালের উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সাপেক্ষে হিসেব করলে কৃষ্ণের জন্মসময় পাওয়া যায়; এই অনুসারে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ ৫৬০০-৩১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সংঘটিত হয়েছিল।চরিত্রসমূহচন্দ্রবংশের বংশবৃক্ষ*.অভিমন্যু :অর্জুন ও সুভদ্রার বীর পুত্র, মহাযুদ্ধে চক্রব্যূহে নিহত হন। অভিমন্যু ওউত্তরার পুত্র হল পরীক্ষিৎ।*.অর্জুন :দেবরাজ ইন্দ্রের বরজাত পাণ্ডু ও কুন্তীর তৃতীয় পুত্র, যিনি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনুর্ধর হিসেবে গণ্য হন।*.অশ্বত্থামা :গুরু দ্রোণাচার্য ও কৃপীর অমরপুত্র ও দুর্যোধনের মিত্র।*.কর্ণ :সূর্যদেবের বরজাত অবিবাহিতা কুন্তীর ধার্মিক দানবীর পুত্র, যিনি কবচ-কুণ্ডল নিয়ে জন্মেছিলেন।*.কুন্তী :কুন্তীভোজের পালিতা কন্যা ও পাণ্ডুর স্ত্রী, এঁর তিন পুত্র – যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন।*.গান্ধারী :গান্ধাররাজ সুবলের কন্যা ও ধৃতরাষ্ট্রের ধর্মপরায়ণ পত্নী।*.দুঃশাসন :শতকৌরবের ২য় কৌরব, দ্যুতসভায় দৌপদীর বস্ত্রহরণ করেন।*.দুর্যোধন :ধৃতরাষ্ট্র ও গান্ধারীর জ্যেষ্ঠ কৌরব পুত্র, গদাযুদ্ধে পারদর্শী ও অন্যতম খলচরিত্র।*.দ্রোণাচার্য :কুরু রাজকুমারদের অস্ত্রশিক্ষক ব্রাহ্মণ গুরু, অশ্বত্থামার পিতা।*.দ্রৌপদী :পাঞ্চালরাজ দ্রুপদের কন্যা ও পঞ্চপাণ্ডবের পত্নী, এঁর সম্মানরক্ষাহেতু মহাযুদ্ধ সংঘটিত হয়।*.ধৃতরাষ্ট্র :বিচিত্রবীর্য ও অম্বিকার অন্ধ পুত্র, যার শতপুত্র কৌরব নামে পরিচিত।*.নকুল :অশ্বিনীকুমারের বরজাত মাদ্রীর পুত্র ৪র্থ পাণ্ডব, অসিচালনায় পারদর্শী।*.পাণ্ডু :বিচিত্রবীর্য ও অম্বালিকার পুত্র,যার পাঁচ পুত্র পাণ্ডব নামে পরিচিত।*.বিদুর :অম্বিকার দাসীর ধর্মজ্ঞানী পুত্র, পাণ্ডব ও কৌরবদের সম্পর্কে কাকা হন।*.ব্যাসদেব :মহাভারতের রচয়িতা মহান ঋষি, যদিও কাহিনিতেও এঁর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ, ধৃতরাষ্ট্র ও পাণ্ডু এঁরই ঔরসজাত।*.ভীম :পবনদেবের বরজাত দ্বিতীয় পাণ্ডব, মহাশক্তিধর গদাধারী, মহাযুদ্ধে দুর্যোধনকে হত্যা করেন।*.ভীষ্ম :মহারাজ শান্তনু ও গঙ্গাদেবীর বীর পুত্র, পিতৃসত্য পালনের জন্য ব্রহ্মচর্য গ্রহণ করেন।*.যুধিষ্ঠির :ধর্মের বরজাত জ্যেষ্ঠ পাণ্ডব, ধার্মিকতা ও সত্যবাদিতার জন্য খ্যাত।*.শকুনি :গান্ধাররাজ সুবলের পু্ত্র কপট দ্যুতক্রীড়ায় পারদর্শী অন্যতম খলচরিত্র, কৌরবদের পরামর্শদানকারী মামা।*.শল্য :পাণ্ডুর স্ত্রী মাদ্রীর ভ্রাতা ও পাণ্ডবদের মামা, দুর্যোধনের ছলনায় যুদ্ধেকৌরবপক্ষ গ্রহণে বাধ্য হন।*.শ্রীকৃষ্ণ :বসুদেব ও দেবকীর অষ্টম পুত্র, ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার, জগতে ধর্মরক্ষাহেতু আবির্ভূত হন।*.সত্যবতী :শান্তনুর ২য় পত্নী, মৎস্যগন্ধা নামে পরিচিত, পুত্রের নাম – চিত্রাঙ্গদ ও বিচিত্রবীর্য।*.সহদেব :অশ্বিনীকুমারের বরজাত মাদ্রীর পুত্র শেষ পাণ্ডব, জ্যোতিষবিদ্যায় পারদর্শী।এছাড়াও মহাভারতেকৃপাচার্য,ঘটোৎকচ,দ্রুপদ,বলরাম,বিরাট,শান্তনুএবং অসংখ্য প্রধান-অপ্রধান চরিত্র রয়েছে।কুরু পরিবারের বংশতালিকাকুরু রাজবংশগঙ্গাশান্তনুসত্যবতীপরাশর    ভীষ্মচিত্রাঙ্গদঅম্বিকাবিচিত্রবীর্যঅম্বালিকাবেদব্যাস  ধৃতরাষ্ট্রগান্ধারীশকুনিকুন্তীপাণ্ডুমাদ্রী  কর্ণযুধিষ্ঠিরভীমঅর্জুনসুভদ্রানকুলসহদেব দুর্যোধন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন